বংশাবলির প্রথম খণ্ড।
1
বংশাবলির প্রথম খন্ড।
আদমের বংশাবলি।
1
আদম, শেথ, ইনোশ,
2
কৈনন, মহললেল, যেরদ,
3
হনোক, মথূশেলহ, লেমক।
4
নোহ, শেম, হাম ও যেফৎ।
5
যেফতের ছেলেরা হল গোমর, মাগোগ, মাদয়, যবন, তুবল, মেশক ও তীরস।
6
গোমরের ছেলেরা হল অস্কিনস, দীফৎ ও তোগর্ম।
7
যবনের ছেলেরা হল ইলীশা, তর্শীশ, কিত্তীম ও রোদানীম।
8
হামের ছেলেরা হল কূশ, মিসর, পূট ও কনান।
9
কূশের ছেলেরা হল সবা, হবীলা, সপ্তা, রয়মা ও সপ্তকা। রয়মার ছেলেরা হল শিবা ও দদান।
10
নিম্রোদ কূশের ছেলে। তিনি পৃথিবীতে একজন ক্ষমতাশালী পুরুষ হয়ে উঠেছিলেন।
11
লূদীয়, অনামীয়, লহাবীয়, নপ্তুহীয়,
12
পথ্রোষীয়, কস্লূহীয়েরা ছিল পলেষ্টীয়দের পূর্বপুরুষ এবং কপ্তোরীয়, এই সব মিশরের বংশের লোক।
13
কনানের বড় ছেলের নাম সীদোন।
14
তার পরে হেৎ, যিবূষীয়, ইমোরীয়, গির্গাশীয়,
15
হিব্বীয়,
16
অর্কীয়, সীনীয়, অর্বদীয়, সমারীয় এবং হমাতীয়।
17
শেমের ছেলেরা হল এলম, অশূর, অর্ফক্ষদ, লূদ ও অরাম এবং ঊষ, হূল, গেথর ও মেশেক।
18
অর্ফক্ষদ শেলহের জন্ম দিলেন ও শেলহ এবরের জন্ম দিলেন।
19
এবরের দুইটি ছেলে হয়েছিল। তাদের একজনের নাম পেলগ(বিভাগ); কারণ তার সময়ে পৃথিবী ভাগ হয়েছিল; তাঁর ভাইয়ের নাম ছিল যক্তন।
20
যক্তনের ছেলেরা হল অল্মোদদ, শেলফ,
21
হৎসর্মাবৎ, যেরহ, হদোরাম, ঊসল, দিক্ল,
22
এবল, অবীমায়েল, শিবা,
23
ওফীর, হবীলা ও যোববের জন্ম দিলেন। এরা সবাই যক্তনের ছেলে।
24
শেম, অর্ফক্ষদ, শেলহ,
25
এবর, পেলগ, রিয়ূ,
26
সরূগ, নাহোর, তেরহ,
27
অব্রাম, অর্থাৎ অব্রাহাম।
28
অব্রাহামের ছেলেরা হল ইস্হাক ও ইশ্মায়েল।
29
তাঁদের বংশের কথা এই: ইশ্মায়েলের বড় ছেলে নবায়োৎ, তার পরে কেদর, অদ্বেল, মিব্সম,
30
মিশ্ম, দূমা, মসা, হদদ, তেমা,
31
যিটূর, নাফীশ ও কেদমা। এরা ইশ্মায়েলের ছেলে।
32
অব্রাহামের উপপত্নী কটূরার ছেলেরা হল সিম্রণ, যক্ষণ, মদান, মিদিয়ন, যিশ্বক ও শূহ। যক্ষণের ছেলেরা হল শিবা ও দদান।
33
মিদিয়নের ছেলেরা হল ঐফা, এফর, হনোক, অবীদ ও ইল্দায়া। এরা সবাই ছিল কটূরার বংশধর।
34
অব্রাহামের ছেলে ইস্হাকের ছেলেরা হল এষৌ আর ইস্রায়েল।
35
এষৌর ছেলেরা হল ইলীফস, রূয়েল, যিয়ূশ, যালম ও কোরহ।
36
ইলীফসের ছেলেরা হল তৈমন, ওমার, সফী, গয়িতম, কনস এবং তিম্না ও অমালেক।
37
রূয়েলের ছেলেরা হল নহৎ, সেরহ, শম্ম ও মিসা।
38
সেয়ীরের ছেলেরা হল লোটন, শোবল, শিবিয়োন, অনা, দিশোন, এৎসর ও দীশন।
39
লোটনের ছেলেরা হল হোরি ও হোমম। তিম্না ছিল লোটনের বোন।
40
শোবলের ছেলেরা হল অলিয়ন, মানহৎ, এবল, শফী ও ওনম। সিবিয়োনের ছেলেরা হল অয়া ও অনা।
41
অনার ছেলে হল দিশোন। দিশোনের ছেলেরা হল হম্রণ, ইশ্বন, যিত্রণ ও করাণ।
42
এৎসরের ছেলেরা হল বিল্হন, সাবন ও যাকন। দীশনের ছেলেরা হল ঊষ ও অরাণ।
43
ইস্রায়েলীয়দের উপরে কোনো রাজা রাজত্ব করবার আগে এরা ইদোম দেশের রাজা ছিলেন; বিয়োরের ছেলে বেলা। তাঁর রাজধানীর নাম ছিল দিন্হাবা।
44
বেলার মৃত্যুর পরে তাঁর জায়গায় বস্রা শহরের সেরহের ছেলে যোবব রাজত্ব করেন।
45
যোববের মৃত্যুর পরে তাঁর জায়গায় তৈমন দেশের হূশম রাজা হয়েছিলেন।
46
হূশমের মৃত্যুর পরে তাঁর জায়গায় বদদের ছেলে হদদ্ রাজা হয়েছিলেন। তিনি মোয়াব দেশে মিদিয়নীয়দের হারিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর রাজধানীর নাম ছিল অবীৎ।
47
আর হদদের মৃত্যুর পরে তাঁর জায়গায় মস্রেকা শহরের সম্ল রাজা হয়েছিলেন।
48
আর সম্লর মৃত্যুর পরে তাঁর জায়গায় সেই জায়গায় (ফরাৎ বা ইউফ্রেটিস) নদীর কাছে রহোবোৎ শহরের শৌল তাঁর পদে রাজা হয়েছিলেন।
49
আর শৌলেরমৃত্যুর পরে তাঁর জায়গায় অক্বোরের ছেলে বাল্ হানন রাজা হয়েছিলেন।
50
আর বাল্ হাননের মৃত্যুর পরে তাঁর জায়গায় হদদ্ রাজা হয়েছিলেন। তাঁর রাজধানীর নাম ছিল পায় এবং তাঁর স্ত্রীর নাম ছিল মহেটবেল। তিনি মট্রেদের মেয়ে এবং মেষাহবের নাতনী।
51
পরে হদদের মৃত্যু হয়েছিল।
52
ইদোমের দলপতিদের নাম তিম্ন, অলিয়া, যিথেৎ, অহলীবামা, এলা, পীনোন,
53
কনস, তৈমন, মিব্সর,
54
মগদীয়েল ও ঈরম। এরা সবাই ইদোমের দলপতি ছিল।
2
1
ইস্রায়েলের ছেলেরা হল রূবেণ, শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর, সবূলূন,
2
দান, যোষেফ, বিন্যামীন, নপ্তালি, গাদ ও আশের।
যিহূদার বংশ তালিকা
3
যিহূদার ছেলেরা হল এর, ওনন ও শেলা। তাঁর এই তিনজন ছেলে কনানীয় বৎ শূয়ার গর্ভে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন৷ যিহূদার বড় ছেলে সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে খারাপ হওয়াতে তিনি তাকে মেরে ফেললেন।
4
যিহূদার ছেলের স্ত্রী তামরের গর্ভে যিহূদার ঔরসে পেরস ও সেরহ দুই ছেলের জন্ম হয়েছিল। যিহূদার মোট পাঁচটি ছেলে ছিল।
5
পেরসের ছেলেরা হল হিষ্রোণ ও হামূল।
6
সেরহের ছেলেরা হল শিম্রি, এথন, হেমন, কল্কোল ও দারা। এরা ছিল মোট পাঁচজন।
7
কর্মির ছেলে আখর বাদ দেওয়া জিনিসের বিষয়ে অবাধ্য হয়ে ইস্রায়েলের কাঁটাস্বরূপ হয়েছিল।
8
এথনের ছেলে অসরিয়।
9
হিষ্রোণের ছেলেরা হল যিরহমেল, রাম ও কালুবায়।
10
রামের ছেলে হল অম্মীনাদব ও অম্মীনাদবের ছেলে হল নহশোন; তিনি যিহূদা বংশের নেতা ছিলেন।
11
নহশোনের ছেলে সল্মোন ও সল্মোনের ছেলে বোয়স।
12
বোয়সের ছেলে ওবেদ আর ওবেদের ছেলে যিশয়।
13
যিশয়ের বড় ছেলে হল ইলীয়াব, দ্বিতীয় অবীনাদব, তৃতীয় শম্ম,
14
চতুর্থ নথনেল, পঞ্চম রদ্দয়,
15
ষষ্ঠ ওৎসম ও সপ্তম দায়ূদ।
16
আর তাদের বোনেরা হল সরূয়া ও অবীগল। অবীশয়, যোয়াব ও অসাহেল ছিলেন সরূয়ার তিনজন ছেলে।
17
অবীগলের ছেলে অমাসা আর ইশ্মায়েলীয় যেথর ছিলেন অমাসার বাবা।
18
হিষ্রোণের ছেলে কালেবের স্ত্রী অসূবার গর্ভে ও যিরিয়োতের গর্ভে ছেলেমেয়ে হয়েছিল। অসূবার ছেলেরা হল যেশর, শোবব ও অর্দোন।
19
পরে অসূবা মারা গেলে কালেব ইফ্রাথাকে বিয়ে করলেন। ইফ্রাথার গর্ভে হূরের জন্ম হয়েছিল।
20
হূরের ছেলে ঊরি ও ঊরির ছেলে বৎসলেল।
21
পরে হিষ্রোণ ষাট বছর বয়সে মাখীরের মেয়ের কাছে গেল; সে তাকে বিয়ে করল, তাতে সেই স্ত্রী তার ঔরসে সগূবের জন্ম দিল।
22
সগূবের ছেলের যায়ীর, গিলিয়দ দেশে তাঁর তেইশটা গ্রাম ছিল।
23
আর গশূর ও অরাম তাদের থেকে যায়ীরের গ্রাম সব নিয়ে নিল এবং তার সঙ্গে কনাৎ ও তার উপনগর সব, অর্থাৎ ষাটটা গ্রাম অধিকার করে নিল। এরা সবাই গিলিয়দের বাবা মাখীরের বংশের লোক।
24
কালেব ইফ্রাথায় হিষ্রোণের মৃত্যুর পর হিষ্রোণের স্ত্রী অবিয়া তাঁর জন্য তকোয়ের বাবা অসহূরকে জন্ম দিল।
25
হিষ্রোণের বড় ছেলে যিরহমেলের ছেলেরা হল; বড় ছেলে রাম, তারপর বূনা, ওরণ, ওৎসম ও অহিয়।
26
অটারা নামে যিরহমেলের আর একজন স্ত্রী ছিল। সে ওনমের মা ছিল।
27
যিরহমেলের বড় ছেলে রামের ছেলেরা হল মাষ, যামীন ও একর।
28
ওনমের ছেলেরা হল শম্ময় ও যাদা। শম্ময়ের ছেলেরা হল নাদব ও অবীশূর।
29
অবীশূরের স্ত্রীর নাম ছিল অবীহয়িল। তার গর্ভে অহবান ও মোলীদের জন্ম হয়েছিল।
30
নাদবের ছেলেরা হল সেলদ ও অপ্পয়িম, কিন্তু সেলদ ছেলে ছাড়াই মারা গেল।
31
অপ্পয়িমের ছেলে যিশী, যিশীর ছেলে শেশন ও শেশনের ছেলে অহলয়।
32
শম্ময়ের ভাই যাদার ছেলেরা হল যেথর ও যোনাথন; যেথর ছেলে ছাড়াই মারা গেলেন।
33
যোনাথনের ছেলেরা হল পেলৎ ও সাসা। এরা ছিল যিরহমেলের বংশধর।
34
শেশনের শুধু মেয়ে ছিল, কোনো ছেলে ছিল না। যার্হা নামে শেশনের একজন মিশরীয় দাস ছিল।
35
শেশন তার দাস যার্হার সঙ্গে তার একজন মেয়ের বিয়ে দিল এবং সেই মেয়ের গর্ভে অত্তয়ের জন্ম হয়েছিল।
36
অত্তয়ের ছেলে নাথন, নাথনের ছেলে সাবদ,
37
সাবদের ছেলে ইফ্লল, ইফ্ললের ছেলে ওবেদ,
38
ওবেদের ছেলে যেহূ, যেহূর ছেলে অসরিয়,
39
অসরিয়ের ছেলে হেলস, হেলসের ছেলে ইলীয়াসা,
40
ইলীয়াসার ছেলে সিস্ময়, সিস্ময়ের ছেলে শল্লুম,
41
শল্লুমের ছেলে যিকমিয় আর যিকমিয়ের ছেলে ইলীশামা।
42
যিরহমেলের ভাই কালেবের ছেলেদের মধ্যে মেশা ছিল বড়। মেশার ছেলে সীফ, সীফের ছেলে মারেশা আর মারেশার ছেলে হিব্রোণ।
43
হিব্রোণের ছেলেরা হল কোরহ, তপূহ, রেকম ও শেমা।
44
শেমার ছেলে রহম, রহমের ছেলে যর্কিয়ম। রেকমের ছেলে শম্ময়,
45
শম্ময়ের ছেলে মায়োন আর মায়োনের ছেলে বৈৎসূর।
46
কালেবের উপপত্নী ঐফার গর্ভে হারণ, মোৎসা ও গাসেসের জন্ম হয়েছিল এবং হারণের ছেলে গাসেস।
47
যেহদয়ের ছেলেরা হল রেগম, যোথম, গেসন, পেলট, ঐফা ও শাফ।
48
কালেবের উপপত্নী মাখার গর্ভে শেবর, তির্হনঃ, শাফ ও শিবার জন্ম হয়েছিল।
49
আরও সে মদ্মন্নার বাবা শাফকে এবং মক্বেনার ও গিবিয়ার বাবা শিবার জন্ম দিল; আর কালেবের মেয়ের নাম ছিল অক্ষা। এরা ছিল কালেবের বংশধর।
50
ইফ্রাথার বড় ছেলে বিনহূর; শোবল কিরিয়ৎ যিয়ারীমের বাবা;
51
বৈৎ লেহমের বাবা শল্ম, বৈৎ গাদের বাবা হারেফ।
52
কিরিয়ৎ যিয়ারীমের বাবা শোবলের ছেলে হরোয়া, মনূহোতীয়দের অর্ধেক লোক।
53
আর কিরিয়ৎ যিয়ারীমের গোষ্ঠী; যিত্রীয়, পূথীয়, শূমাথীয় ও মিশ্রায়ীয়েরা, এদের থেকে সরাথীয় ও ইষ্টায়োলীয় বংশের সৃষ্টি হয়েছিল।
54
শল্মের বংশের লোকেরা হল বৈৎলেহম ও নটোফাতীয়েরা, অট্রোৎ বৈৎ যোয়াব, মনহতীয়দের অর্ধেক লোক, সরায়ীয়।
55
আর যাবেষে বাসকারী লেখকেরা, তিরিয়াথীয়েরা, শিমিয়থীয়েরা ও সূখাথীয়েরা। এরা ছিল কীনীয় গোষ্ঠী, রেখবীয়দের বাবা হম্মতের বংশের লোক।
3
1
দায়ূদের যে সব ছেলেদের হিব্রোণে জন্ম হয়েছিল তারা হল তাঁর বড় ছেলে অম্নোন, সে যিষ্রিয়েলীয়া অহীনোয়মের গর্ভে জন্মানো; দ্বিতীয় দানিয়েল, সে কর্মিলীয়া অবীগলের গর্ভে জন্মানো;
2
তৃতীয় অবশালোম, সে গশূরের রাজা তল্ময়ের মেয়ে মাখার গর্ভে জন্মানো; চতুর্থ ছেলে ছিল হগীতের ছেলে আদোনিয়;
3
পঞ্চম ছেলে শফটিয়, সে অবীটলের গর্ভে জন্মানো; ষষ্ঠ যিত্রিয়ম, সে তাঁর স্ত্রী ইগ্লার গর্ভে জন্মানো।
4
দায়ূদ হিব্রোণে সাড়ে সাত বছর রাজত্ব করেছিলেন, আর সেই সময় হিব্রোণে তাঁর এই ছয় ছেলের জন্ম হয়েছিল। দায়ূদ তেত্রিশ বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন।
5
আর তাঁর এই সব ছেলে যিরুশালেমে জন্মায়; বত্শূয়ার(বৎশেবা) গর্ভে তাঁর চারজন ছেলের জন্ম হয়েছিল। তারা হল শিমিয়, শোবব, নাথন ও শলোমন।
6
আর যিভর, ইলীশামা, ইলীফেলট,
7
নোগহ, নেফগ, যাফিয়,
8
ইলীশামা, ইলীয়াদা, ও ইলীফেলট।
9
এরা ছিল দায়ূদের ছেলে, আর তাদের বোনের নাম ছিল তামর। উপপত্নীদের সন্তানদের থেকে এরা আলাদা।
10
শলোমনের ছেলে রহবিয়াম, তাঁর ছেলে অবিয়, তাঁর ছেলে আসা, তাঁর ছেলে যিহোশাফট,
11
তাঁর ছেলে যোরাম, তাঁর ছেলে অহসিয়, তাঁর ছেলে যোয়াশ,
12
যোয়াশের ছেলে অমৎসিয়, তাঁর ছেলে অসরিয়, তাঁর ছেলে যোথম,
13
তাঁর ছেলে আহস, তাঁর ছেলে হিষ্কিয়, তাঁর ছেলে মনঃশি,
14
তাঁর ছেলে আমোন ও তাঁর ছেলে যোশিয়।
15
যোশিয়ের প্রথম ছেলে যোহানন, দ্বিতীয় যিহোয়াকীম, তৃতীয় সিদিকিয়, চতুর্থ শল্লুম।
16
যিহোয়াকীমের ছেলেরা হল যিকনিয় ও সিদিকিয়।
17
বন্দী যিকনিয়ের ছেলেরা হল শল্টীয়েল,
18
মল্কীরাম, পদায়, শিনৎসর, যিকমিয়, হোশামা ও নদবিয়।
19
পদায়ের ছেলেরা হল সরুব্বাবিল ও শিমিয়ি। সরুব্বাবিলের ছেলেরা হল মশল্লুম ও হনানিয়। তাদের বোনের নাম ছিল শলোমীৎ।
20
আর হশুবা, ওহেল, বেরিখিয়, হসদিয় ও যুশবহেষদ, এই পাঁচ জন।
21
হনানিয়ের বংশের লোকেরা হল পলটিয় ও যিশায়াহ; এবং রফায়ের, অর্ণনের, ওবদিয়ের ও শখনিয়ের ছেলেরা।
22
শখনিয়ের বংশের লোকেরা হল শময়িয় ও তার ছেলেরা; হটুশ, যিগাল, বারীহ, নিয়রিয় ও শাফট। মোট ছয়জন।
23
নিয়রিয়ের তিনজন ছেলে হল ইলীয়ৈনয়, হিষ্কিয় ও অস্রীকাম।
24
ইলীয়ৈনয়ের সাতজন ছেলে হল হোদবিয়, ইলীয়াশীব, পলায়ঃ, অক্কুব, যোহানন, দলায় ও অনানি।
4
1
যিহূদার বংশের লোকেরা হল পেরস, হিষ্রোণ, কর্মী, হূর ও শোবল।
2
শোবলের ছেলে রায়া, রায়ার ছেলে যহৎ এবং যহতের ছেলে অহূময় ও লহদ। এরা ছিল সরাথীয় বংশের লোক।
3
আর এই সব ঐটমের বাবার ছেলে যিষ্রিয়েল, যিশ্মা ও যিদ্বশ। তাদের বোনের নাম ছিল হৎসলিল পোনী।
4
গাদোরের বাবা পনূয়েল ও হূশের বাবা এসর। এরা বৈৎলেহমের বাবা ইফ্রাথার বড় ছেলে হূরের বংশধর।
5
তকোয়ের বাবা অস্হূরের দুইজন স্ত্রী ছিল হিলা ও নারা।
6
নারার গর্ভে অহুষম, হেফর, তৈমিনি ও অহষ্টরির জন্ম হয়েছিল। এরা ছিল নারার ছেলে।
7
হিলার ছেলেরা হল সেরৎ, যিৎসোহর ও ইৎনন।
8
কোষের (হক্কোষ) ছেলেরা হল আনূব ও সোবেবা এবং হারুমের ছেলে অহর্হলের গোষ্ঠী সব।
9
যাবেষ তাঁর ভাইদের চেয়ে আরও সম্মানিত লোক ছিলেন। তাঁর মা যাবেশ নাম রেখে বলেছিলেন, “আমি খুব কষ্টে তাকে জন্ম দিয়েছি।”
10
যাবেষ ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে ডেকে বলেছিলেন, “তুমি আমাকে আশীর্বাদ কর আর আমার রাজ্যাংশ বাড়িয়ে দাও। তোমার শক্তি আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকুক এবং সমস্ত বিপদ থেকে তুমি আমাকে রক্ষা কর যাতে আমি কষ্ট না পাই।” আর ঈশ্বর তাঁর প্রার্থনা শুনলেন।
11
শূহের ভাই কলূবের ছেলে মহীর, তিনি ইষ্টোনের বাবা
12
আর ইষ্টোনের ছেলেরা হল বৈৎ রাফা, পাসেহ এবং ঈরনাহসের বাবা তহিন্ন। এরা সবাই ছিল রেকার লোক।
13
কনসের ছেলেরা হল অৎনীয়েল ও সরায় এবং অৎনীয়েলের ছেলে হথৎ।
14
মিয়োনোথয়ের ছেলে হল অফ্রা আর সরায়ের ছেলে শিল্পকারদের উপত্যকা নিবাসীদের বাবা যোয়াব, কারণ তারা শিল্পকার ছিল।
15
যিফুন্নির ছেলে কালেবের ছেলেরা হল ঈরূ, এলা ও নয়ম। এলার ছেলের নাম ছিল কনস।
16
যিহলিলেলের ছেলেরা হল সীফ, সীফা, তীরিয় ও অসারেল।
17
ইষ্রার ছেলেরা হল যেথর, মেরদ, এফর ও যালোন। মেরদ ফরৌণের একজন মেয়ে বিথিয়াকে বিয়ে করেছিল।
18
আর তার যিহূদীয়া স্ত্রী গদরের বাবা যেরদকে, সোখোর বাবা হেবরকে ও সানোহের বাবা যিকুথীয়েলকে জন্ম দিল। ওরা ফরৌণের মেয়ে বিথিয়ার সন্তান, যাকে মেরদ বিয়ে করেছিল।
19
নহমের বোনকে হোদিয় বিয়ে করেছিল, তার ছেলেরা হল গর্মীয় কিয়ীলার বাবা ও মাখাথীয় ইষ্টিমোয়।
20
শীমোনের ছেলেরা হল অম্নোন, রিন্ন, বিন্ হানন ও তীলোন। যিশীর ছেলেরা হল সোহেৎ ও বিন্ সোহেৎ।
21
যিহূদার ছেলে শেলার বংশের লেকার বাবা এর ও মারেশার বাবা লাদা, বৈৎ অসবেয়ের যে লোকেরা মসীনার কাপড় বুনত তাদের সব বংশ,
22
আর যোকীম ও কোষেবার লোক এবং যোয়াশ ও সারফ নামে মোয়াবের দুই শাসনকর্তা ও যাশূবিলেহম এগুলো ছিল খুব পুরানো দিনের তালিকা।
23
এরা ছিল কুমোর এবং নতায়ীম ও গদেরাতে বাস করত; তারা রাজার কাজকর্ম করবার জন্যই তারা সেখানে থাকত।
শিমিয়োনের বংশ তালিকা।
24
শিমিয়োনের ছেলেরা হল নমূয়েল, যামীন, যারীব, সেরহ ও শৌল।
25
শৌলের ছেলে হল শল্লুম, শল্লুমের ছেলে মিব্সম ও মিব্সমের ছেলে মিশ্ম।
26
মিশ্মের ছেলে হম্মুয়েল, তার ছেলে শক্কুর ও তার ছেলে শিময়ি।
27
শিময়ির ষোলজন ছেলে ও ছয়জন মেয়ে ছিল, কিন্তু তার ভাইদের বেশি ছেলেমেয়ে ছিল না। সেইজন্য তাদের সমস্ত গোষ্ঠীর মধ্যে যিহূদা গোষ্ঠীর মত এত লোক বৃদ্ধি পায়নি।
28
শিমিয়োন গোষ্ঠীর লোকেরা বের্ শেবাতে,
29
মোলাদাতে, হৎসর শূয়ালে, বিল্হাতে, এৎসমে, তোলদে,
30
বথূয়েলে, হর্মাতে, সিক্লগে, বৈৎ মর্কাবোতে, হৎসর সূষীমে,
31
বৈৎ বিরীতে ও শারয়িমে বাস করত। দায়ূদের রাজত্ব পর্যন্ত এই সব শহর তাদের ছিল।
32
তাদের অন্যান্য গ্রামগুলোর নাম ছিল ঐটম, ঐন, রিম্মোণ, তোখেন ও আশন। বাল পর্যন্ত এই পাঁচটা গ্রামের চারপাশের জায়গাগুলোও তাদের অধীনে ছিল।
33
এগুলোতে তারা বাস করত এবং তাদের নিজস্ব বংশ তালিকা ছিল।
34
মশোবব, যম্লেক, অমৎসিয়ের ছেলে যোশঃ, যোয়েল
35
এবং যোশিবিয়ের অসায়েলের ছেলে সরায়ের ছেলে যোশিবিয়ের ছেলে যেহূ।
36
আর ইলিয়ৈনয়, যাকোবা, যিশোহায়, অসায়, অদীয়েল, যিশীমীয়েল, বনায়
37
এবং শময়িয়ের ছেলে শিম্রির ছেলে যিদয়িয়ের ছেলে অলোনের ছেলে শিফির ছেলে সীষঃ;
38
নিজের নিজের নামে উল্লিখিত এই লোকেরা নিজের নিজের গোষ্ঠীর মধ্যে নেতা ছিল এবং এদের সব বংশ খুব বেড়ে গেল।
39
পশুপাল চরাবার জায়গার খোঁজে এই লোকেরা গদোরের বাইরে উপত্যকার পূর্ব দিকে চলে গেল।
40
তারা বহু ঘাসযুক্ত জায়গা পেল, আর সে দেশ বেশ বড়, শান্তিপূর্ণ ও নিরিবিলি ছিল। কারণ আগে হামের বংশের কিছু লোক সেখানে বাস করত।
41
শিমিয়োন গোষ্ঠীর এই সব নথিভুক্ত করা লোকেরা যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের সময়ে সেখানে গিয়েছিল। তারা হামীয়দের বাসস্থানে গিয়ে তাদের আক্রমণ করল। এছাড়া তারা সেখানকার মিয়ূনীয়দেরও আক্রমণ করে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করল। তারপর তারা ঐ লোকদের জায়গায় বাস করতে লাগল, কারণ তাদের পশুপালের জন্য সেখানে প্রচুর ঘাস ছিল।
42
শিমিয়োনীয়দের মধ্যে পাঁচশো লোক যিশীর ছেলে পলটিয়, নিয়রিয়, রফায়িয় ও উষীয়েলকে তাদের নেতা করে নিয়ে সেয়ীর নামে পাহাড়ে গেল।
43
আগে অমালেকীয়দের কিছু লোক সেয়ীরে পালিয়ে এসে সেখানে বাস করছিল। শিমিয়োনীয়েরা সেই সব লোকদের মেরে ফেলে সেখানে বাস করতে লাগল। আজও তারা সেখানে বাস করছে।
5
রূবেন, গাদ, ও মনশিঃর বংশাবলি
1
ইস্রায়েলের বড় ছেলে রূবেণের ছেলে বড় ছিলেন যদিও, কিন্তু তিনি নিজের বাবার বিছানা অপবিত্র করেছিলেন, এজন্য তাঁর বড় ছেলের অধিকার ইস্রায়েলের ছেলে যোষেফের ছেলেদের দেওয়া হল, আর বংশাবলির বড় ছেলে অনুসারে উল্লেখ করা হয়না।
2
কারণ যিহূদা নিজের ভাইদের মধ্যে শক্তিশালী হল এবং তাঁর থেকেই নেতা সৃষ্টি হয়েছিল, কিন্তু বড় ছেলের অধিকার যোষেফের হল।
3
ইস্রায়েলের বড় ছেলে রূবেণের ছেলেরা হল হনোক, পল্লু, হিষ্রোণ ও কর্মী।
4
যোয়েলের বংশধর তাঁর ছেলে শিময়িয়, শিময়িয়ের ছেলে গোগ, গোগের ছেলে শিমিয়ি,
5
শিমিয়ির ছেলে মীখা, মীখার ছেলে রায়া, রায়ার ছেলে বাল এবং বালের ছেলে বেরা।
6
বেরা ছিলেন রূবেণীয়দের নেতা। অশূরের রাজা তিলগৎ পিলনেষর তাঁকে বন্দী করে নিয়ে গিয়েছিলেন।
7
যখন তাদের বংশাবলি লেখা হল, তখন নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে তার এই ভাইদের [উল্লেখ করা হল];
8
প্রধান হল যিয়ীয়েল ও সখরিয়, আর যোয়েলের ছেলে শেমার ছেলে আসসের ছেলে বেলা; সে অরোয়েরে নবো ও বাল্ মিয়োন পর্যন্ত জায়গায় বাস করত।
9
আর পূর্বদিকের ফরাৎ নদী থেকে [বিস্তৃত] মরু এলাকার প্রবেশস্থান পর্যন্ত বাস করত; কারণ গিলিয়দ দেশে তাদের পশুপালের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল।
10
আর শৌলের রাজত্বের সময় তারা হাগরীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করল এবং এরা তাদের হাতে পরাজিত হল; আর তারা এদের তাঁবুতে গিলিয়দের পূর্ব দিকে সব জায়গায় বাস করল।
11
গাদ গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের সামনে বাশন দেশের সলখা পর্যন্ত বাস করত।
12
প্রধান যোয়েল, দ্বিতীয় শাফম, আর যানয় ও শাফট, এরা বাশনে থাকতেন।
13
আর তাদের পরিবার অনুযায়ী আত্মীয় মীখায়েল, মশুল্লম, শেবা, যোরায়, যাকন, সীয় ও এবর, সবসুদ্ধ সাত জন।
14
বূষের ছেলে যহদো, যহদোর ছেলে যিশীশয়, যিশীশয়ের ছেলে মীখায়েল, মীখায়েলের ছেলে গিলিয়দ, গিলিয়দের ছেলে যারোহ, যারোহের ছেলে হূরি, হূরির ছেলে অবীহয়িল, তারা সেই অবীহয়িলের ছেলে।
15
অব্দিয়েলের ছেলে অহি ছিলেন তাদের পিতৃকুলের প্রধান আর অব্দিয়েল ছিল গূনির ছেলে।
16
তারা গিলিয়দে বাশনে ও সেখানকার উপনগর সকলে এবং তাদের সীমা পর্যন্ত শারোণের সমস্ত পশু চরাবার জায়গায় বাস করত।
17
যিহূদার রাজা যোথম ও ইস্রায়েলের রাজা যারবিয়ামের রাজত্বের সময়ে তাদের সবার বংশ তালিকা লেখা হয়েছিল।
18
রূবেণীয়দের, গাদীয়দের ও মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোক থেকে চুয়াল্লিশ হাজার সাতশো ষাটজন শক্তিশালী লোক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল। তারা ঢাল, তলোয়ার ও ধনুকের ব্যবহার জানত এবং যুদ্ধে বেশ দক্ষ ছিল।
19
তারা হাগরীয়দের সঙ্গে এবং যিটূরের, নাফীশের ও নোদবের সঙ্গে যুদ্ধ করল।
20
এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার সময় ঈশ্বর তাদের সাহায্য করেছিলেন। তিনি হাগরীয় ও তাদের পক্ষের সমস্ত লোকদের তাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন, কারণ যুদ্ধের সময় তারা ঈশ্বরের কাছে কেঁদেছিল। তারা তাঁর উপর নির্ভর করেছিল বলে তিনি তাদের প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন।
21
তারা হাগরীয়দের পঞ্চাশ হাজার উট, আড়াই লক্ষ ভেড়া ও দুই হাজার গাধা দখল করে নিল এবং এক লক্ষ লোককে বন্দী করে নিয়ে গেল।
22
প্রকৃতপক্ষে অনেকে মারা গেল, কারণ ঈশ্বরের পরিচালনায় এই যুদ্ধ হয়েছিল। আর তারা বন্দী হবার সময় পর্যন্ত ওখানে বাস করল।
23
মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোক সেই দেশে বাস করত; তারা সংখ্যায় বেড়ে গিয়ে বাশন থেকে বাল হর্মোণ, সনীর ও হর্মোণ পাহাড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল।
24
এইসব লোক তাদের বংশের নেতা ছিলেন এফর, যিশী, ইলীয়েল, অস্রীয়েল, যিরমিয়, হোদবিয় ও যহদীয়েল। এই সব শক্তিশালী বীর ও বিখ্যাত লোকেরা নিজের নিজের পরিবারের নেতা ছিলেন।
25
এরা নিজের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অবিশ্বস্ত হল এবং ঈশ্বর সেই দেশের যে জাতিদেরকে তাঁদের সামনে থেকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন, তারা তাদের দেব দেবতাদের অনুসরণ করে ব্যভিচারী হল।
26
তাতে ইস্রায়েলের ঈশ্বর অশূরের রাজা পূলের মন, অশূরের রাজা তিগ্লৎ পিলেষরের মন উত্তেজিত করে তুললেন, আর তিনি তাদেরকে অর্থাৎ রূবেণীয়, গাদীয়দেরকে এবং মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোককে নিয়ে গিয়ে হেলহ, হাবোর ও হারা এলাকায় এবং গোষণ নদীর ধারে নিয়ে গেলেন; আর আজও তারা সেখানেই আছে।
6
লেবির বংশ তালিকা।
1
লেবির ছেলেরা হল গের্শোন, কহাৎ ও মরারি।
2
কহাতের ছেলেরা হল অম্রাম, যিষ্হর, হিব্রোণ ও উষীয়েল।
3
অম্রামের ছেলেরা হল হারোণ, মোশি ও মরিয়ম। হারোণের ছেলেরা হল নাদব, অবীহূ, ইলিয়াসর ও ঈথামর।
4
ইলিয়াসরের ছেলে পীনহস, পীনহসের ছেলে অবিশূয়,
5
অবিশূয়ের ছেলে বুক্কি, বুক্কির ছেলে উষি,
6
উষির ছেলে সরহিয়, সরহিয়ের ছেলে মরায়োৎ,
7
মরায়োতের ছেলে অমরিয়, অমরিয়ের ছেলে অহীটূব,
8
অহীটূবের ছেলে সাদোক, সাদোকের ছেলে অহীমাস,
9
অহীমাসের ছেলে অসরিয়, অসরিয়ের ছেলে যোহানন,
10
যোহাননের ছেলে অসরিয়; ইনি যিরূশালেমে শলোমনের তৈরী মন্দিরে যাজকের কাজ করতেন।
11
অসরিয়ের ছেলে অমরিয়, অমরিয়ের ছেলে অহীটূব,
12
অহীটূবের ছেলে সাদোক, সাদোকের ছেলে শল্লুম,
13
শল্লুমের ছেলে হিল্কিয়, হিল্কিয়ের ছেলে অসরিয়,
14
অসরিয়ের ছেলে সরায় এবং সরায়ের ছেলে যিহোষাদক।
15
সদাপ্রভু যে সময় নবূখদ্নিৎসরকে দিয়ে যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের নিয়ে গেলেন, সেই সময়ে এই যিহোষাদকও গেলেন।
16
লেবির ছেলেরা হল গের্শোম, কহাৎ ও মরারি।
17
গের্শোমের ছেলেদের নাম হল লিব্নি আর শিমিয়ি।
18
কহাতের ছেলেরা হল অম্রাম, যিষ্হর, হিব্রোণ ও উষীয়েল।
19
মরারির ছেলেরা হল মহলি ও মূশি। নিজের নিজের পূর্বপুরুষদের বংশ অনুসারে এইসব লেবীয়দের গোষ্ঠী।
20
গের্শোমের [বংশধর]; তাঁর ছেলে লিব্নি, লিব্নির ছেলে যহৎ, যহতের ছেলে সিম্ম,
21
সিম্মের ছেলে যোয়াহ, যোয়াহের ছেলে ইদ্দো, ইদ্দোর ছেলে সেরহ, সেরহের ছেলে যিয়ত্রয়।
22
কহাতের বংশধর, তার ছেলে অম্মীনাদব, অম্মীনাদবের ছেলে কোরহ, কোরহের ছেলে অসীর,
23
তার ছেলে ইল্কানা, তার ছেলে ইবীয়াসফ, ইবীয়াসফের ছেলে অসীর,
24
তার ছেলে তহৎ, তার ছেলে ঊরীয়েল, তার ছেলে ঊষিয়, তার ছেলে শৌল।
25
ইল্কানার ছেলেরা হল অমাসয়, অহীমোৎ ও ইল্কানা
26
ইল্কানার ছেলে সোফী, তার ছেলে নহৎ,
27
তার ছেলে ইলীয়াব, তার ছেলে যিরোহম, তার ছেলে ইল্কানা এবং তার ছেলে শমূয়েল।
28
শমূয়েলের প্রথম ছেলের নাম যোয়েল ও দ্বিতীয় ছেলের নাম অবিয়।
29
মরারির ছেলের নাম হল মহলি, তার ছেলে লিব্নি, তার ছেলে শিমিয়ি, তার ছেলে উষঃ,
30
তার ছেলে শিমিয়, তার ছেলে হগিয় এবং তার ছেলে অসায়।
31
[নিয়ম সিন্দুক] বিশ্রামস্থান পেলে পর দায়ূদ যাদেরকে সদাপ্রভুর ঘরে গানের কাজে নিযুক্ত করলেন তাদের নাম।
32
শলোমন যিরূশালেমে সদাপ্রভুর ঘর তৈরী না করা পর্যন্ত সেই লোকেরা আবাস তাঁবুর সামনে, অর্থাৎ মিলন তাঁবুর সামনে গান বাজনা করে সদাপ্রভুর সেবা করত। তাদের জন্য যে নিয়ম ঠিক করে দেওয়া হয়েছিল সেই অনুসারে তারা নিজেদের কাজ করত।
33
এই সেবার কাজে যে সব লোকেরা এবং তাদের বংশধরেরা নিযুক্ত হয়েছিল তারা হল: কহাতীয়দের মধ্যে ছিলেন গায়ক হেমন। তিনি ছিলেন যোয়েলের ছেলে, যোয়েল শমূয়েলের ছেলে,
34
শমূয়েল ইল্কানার ছেলে, ইল্কানা যিরোহমের ছেলে, যিরোহম ইলীয়েলের ছেলে, ইলীয়েল তোহের ছেলে,
35
তোহ সূফের ছেলে, সূফ ইল্কানার ছেলে, ইল্কানা মাহতের ছেলে, মাহৎ অমাসয়ের ছেলে,
36
অমাসয় ইল্কানার ছেলে, ইল্কানা যোয়েলের ছেলে, যোয়েল অসরিয়ের ছেলে, অসরিয় সফনিয়ের ছেলে,
37
সফনিয় তহতের ছেলে, তহৎ অসীরের ছেলে, অসীর ইবীয়াসফের ছেলে, ইবীয়াসফ কোরহের ছেলে,
38
কোরহ যিষ্হরের ছেলে, যিষ্হর কহাতের ছেলে, কহাৎ লেবির ছেলে এবং লেবি ইস্রায়েলের ছেলে।
39
হেমনের সহকর্মী আসফ, তিনি তার ডান দিকে দাঁড়াত; সেই আসফ ছিলেন বেরিখিয়ের ছেলে, বেরিখিয় শিমিয়ের ছেলে,
40
শিমিয় মীখায়েলের ছেলে, মীখায়েল বাসেয়ের ছেলে, বাসেয় মল্কিয়ের ছেলে,
41
মল্কিয় ইৎনির ছেলে, ইৎনি সেরহের ছেলে, সেরহ অদায়ার ছেলে,
42
অদায়া এথনের ছেলে, এথন সিম্মের ছেলে, সিম্ম শিমিয়ির ছেলে,
43
শিমিয়ি যহতের ছেলে, যহৎ গের্শোমের ছেলে এবং গের্শোম লেবির ছেলে।
44
তাঁদের সহকর্মীরা, অর্থাৎ মরারির ছেলেরা এদের বাম দিকে দাঁড়াতেন। এথন ছিলেন কীশির ছেলে, কীশি অব্দির ছেলে, অব্দি মল্লুকের ছেলে,
45
মল্লুক হশবিয়ের ছেলে, হশবিয় অমৎসিয়ের ছেলে, অমৎসিয় হিল্কিয়ের ছেলে,
46
হিল্কিয় অম্সির ছেলে, অম্সি বানির ছেলে, বানি শেমরের ছেলে,
47
শেমর মহলির ছেলে, মহলি মূশির ছেলে, মূশি মরারির ছেলে এবং মরারি লেবির ছেলে।
48
তাঁদের সঙ্গী লেবীয়দের আবাস তাঁবুর, অর্থাৎ ঈশ্বরের গৃহের অন্যান্য সমস্ত কাজে নিযুক্ত করা হয়েছিল।
49
কিন্তু হারোণ ও তাঁর ছেলেরা ঈশ্বরের দাস মোশির সমস্ত আদেশ অনুসারে হোমযজ্ঞ বেদী ও ধূপবেদীর ওপরে উপহার দাহ করতেন এবং মহাপবিত্র স্থানে যা কিছু করবার দরকার তা করতেন আর ইস্রায়েলের পাপ মোচনের জন্য ব্যবস্থা করতেন।
50
হারোণের বংশ তালিকাটি এই হারোণের ছেলে ইলিয়াসর, ইলিয়াসরের ছেলে পীনহস, পীনহসের ছেলে অবীশূয়,
51
অবীশূয়ের ছেলে বুক্কি, বুক্কির ছেলে উষি, উষির ছেলে সরাহিয়,
52
সরাহিয়ের ছেলে মরায়োৎ, মরায়োতের ছেলে অমরিয়, অমরিয়ের ছেলে অহীটূব,
53
অহীটূবের ছেলে সাদোক এবং সাদোকের ছেলে অহীমাস।
54
আর তাঁদের সীমার মধ্যে শিবির স্থাপন অনুযায়ী এইসব তাঁদের বাসস্থান; কহাতীয় হারোণের বংশের লোকদের জন্য প্রথম গুলিবাঁট করা হল।
55
ফলে, তাঁদেরকে যিহূদা এলাকার আশ্রয় শহর হিব্রোণ ও তার চারপাশের পশু চরাবার মাঠ দেওয়া হল।
56
কিন্তু শহরের চারপাশের ক্ষেত খামার ও গ্রামগুলো দেওয়া হয়েছিল যিফুন্নির ছেলে কালেবকে।
57
আর হারোণের ছেলেদের আশ্রয় শহর হিব্রোণ, আর পশু চরাবার মাঠের সঙ্গে লিব্না এবং যত্তীর ও
58
পশু চরাবার মাঠের সঙ্গে ইষ্টিমোয়, পশু চরাবার মাঠের সঙ্গে ছিলেন,
59
পশু চরাবার মাঠের সঙ্গে দবীর, আশন ও বৈৎশেমশ;
60
বিন্যামীন গোষ্ঠীর জায়গা থেকে তাঁদের দেওয়া হল গেবা, আলেমৎ, অনাথোৎ ও এগুলোর চারপাশের পশু চরাবার মাঠ। মোট তেরোটা শহর ও গ্রাম কহাতীয় বংশগুলো পেয়েছিল।
61
মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোকদের এলাকা থেকে দশটা শহর ও গ্রাম গুলিবাঁট অনুসারে কহাতের বাকী বংশের লোকদের দেওয়া হল।
62
বংশ অনুসারে গের্শোমের বংশের লোকদের দেওয়া হল ইষাখর, আশের, নপ্তালি এবং বাশনের মনঃশি গোষ্ঠীর এলাকা থেকে তেরোটা শহর ও গ্রাম।
63
রূবেণ, গাদ ও সবূলূন গোষ্ঠীর এলাকা থেকে গুলিবাঁট করে বারোটা শহর ও বংশ অনুসারে মরারির বংশের লোকদের দেওয়া হল।
64
এইভাবে ইস্রায়েলীয়েরা এই সব শহর ও সেগুলোর পশু চরাবার মাঠ লেবীয়দের দিল।
65
যিহূদা, শিমিয়োন ও বিন্যামীন গোষ্ঠীর এলাকা থেকে যে সব শহরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোও গুলিবাঁট অনুসারে দেওয়া হয়েছিল।
66
কহাতীয়দের কোনো কোনো গোষ্ঠী ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর থেকে কতগুলো শহর দেওয়া হয়েছিল।
67
ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চল থেকে আশ্রয় নগর শিখিম
68
গেষর, যক্মিয়াম, বৈৎ হোরণ, অয়ালোন
69
ও গাৎ রিম্মোণ এবং এগুলোর চারপাশের পশু চরাবার মাঠ তাদের দেওয়া হল।
70
এছাড়া মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোকদের এলাকা থেকে আনের ও বিল্য়ম এবং সেগুলোর চারপাশের পশু চরাবার মাঠ কহাতের বাকী বংশগুলোকে দেওয়া হল।
71
গের্শোমীয়েরা মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোকদের এলাকা থেকে পশু চরাবার মাঠ সমেত বাশনের গোলন ও অষ্টারোৎ পেল;
72
তারা ইষাখর গোষ্ঠীর এলাকা থেকে পেল কেদশ,
73
দাবরৎ, রামোৎ ও আনেম এবং এগুলোর চারপাশের পশু চরাবার মাঠ।
74
আশের গোষ্ঠীর এলাকা থেকে তারা পশু চরাবার মাঠ সমেত মশাল,
75
আব্দোন, হূকোক ও রহোব পেল;
76
নপ্তালি গোষ্ঠীর এলাকা থেকে পেল পশু চরাবার মাঠ সমেত গালীলের কেদশ, হম্মোন ও কিরিয়াথয়িম।
77
বাকী লেবীয়েরা, অর্থাৎ মরারীয়েরা সবূলূন গোষ্ঠীর এলাকা থেকে পশু চরাবার মাঠ সমেত রিম্মোণ ও তাবোর পেল;
78
তারা যিরীহোর পূর্ব দিকে যর্দনের ওপারে রূবেণ গোষ্ঠীর এলাকা থেকে মরু এলাকার বেৎসর, যাহসা,
79
কদেমোৎ ও মেফাৎ;
80
তারা গাদ গোষ্ঠীর এলাকা থেকে পেল গিলিয়দের রামোৎ,
81
মহনয়িম, হিষ্বোণ ও যাসের এবং এগুলোর চারপাশের পশু চরাবার মাঠ।
7
ইষাখর, বিন্যামীন প্রভৃতি ছয় গোষ্ঠীর বংশাবলি।
1
ইষাখরের চারজন ছেলে হল তোলয়, পূয়, যাশূব ও শিম্রোণ।
2
তোলয়ের ছেলেরা হল উষি, রফায়, যিরীয়েল, যহময়, যিব্সম, ও শমূয়েল। এঁরা ছিলেন নিজের নিজের বংশের নেতা। দায়ূদের রাজত্বের সময়ে তোলয়ের বংশের যে সব লোকদের যোদ্ধা হিসাবে বংশ তালিকায় নাম লেখা হয়েছিল তারা সংখ্যায় ছিল বাইশ হাজার ছয়শো।
3
উষির ছেলের নাম যিষ্রাহিয়। যিষ্রাহিয়ের ছেলেরা হল মীখায়েল, ওবদিয়, যোয়েল ও যিশিয়। যিষ্রাহিয় মোট পাঁচজন, এরা সবাই প্রধান লোক ছিলেন।
4
তাঁদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে ছিল অনেক; কাজেই তাঁদের বংশ তালিকার হিসাব মত যুদ্ধ করবার জন্য প্রস্তুত লোকদের সংখ্যা ছিল ছত্রিশ হাজার।
5
ইষাখর গোষ্ঠীর সমস্ত বংশের ভাইয়েরা ও বলবান বীর ছিল, মোট সাতাশি হাজার যোদ্ধার নাম বংশ তালিকায় লেখা হয়েছিল।
6
বিন্যামীনের তিনজন ছেলে হল বেলা, বেখর, ও যিদীয়েল।
7
বেলার পাঁচজন ছেলে হল ইষ্বোণ, উষি, উষীয়েল, যিরেমোৎ ও ঈরী। এঁরা ছিলেন নিজের নিজের বংশের নেতা। তাঁদের বংশ তালিকায় বাইশ হাজার চৌত্রিশ জন লোকের নাম যোদ্ধা হিসাবে লেখা হয়েছিল।
8
বেখরের ছেলেরা হল সমীরাঃ, যোয়াশ, ইলীয়েষর, ইলিয়ো ঐনয়, অম্রি, যিরেমোৎ, অবিয়, অনাথোৎ ও আলেমৎ।
9
তাদের বংশ তালিকায় নেতাদের নাম ও কুড়ি হাজার দুশো জন যোদ্ধার নাম লেখা হয়েছিল।
10
যিদীয়েলের একজন ছেলের নাম বিল্হন। বিল্হনের ছেলেরা হল যিয়ূশ, বিন্যামীন, এহূদ, কনানা, সেথন, তর্শীশ ও অহীশহর।
11
যিদীয়েলের বংশের এই সব লোকেরা ছিলেন বংশের নেতা ও বীর যোদ্ধা। তাঁদের সতেরো হাজার দুশো লোক যুদ্ধে যাবার জন্য যোগ্য ছিল।
12
শুপ্পীম ও হুপ্পীম ছিল ঈরের ছেলে এবং হূশীম ছিল অহেরের ছেলে।
13
নপ্তালির ছেলেরা হল যহসিয়েল, গূনি, যেৎসর ও শল্লুম। এরা বিল্হার নাতি ছিল।
14
মনঃশির ছেলেরা হল অস্রীয়েল ও গিলিয়দের বাবা মাখীর। মনঃশির অরামীয় উপস্ত্রীর গর্ভে এদের জন্ম হয়েছিল।
15
মাখীর হুপ্পীম ও শুপ্পীম থেকে একটি স্ত্রী গ্রহণ করেছিলেন। মাখীরের বোনের নাম ছিল মাখা। মনঃশির বংশের আর একজন লোক ছিল সলফাদ। তার ছিল সব মেয়ে।
16
মাখীরের স্ত্রী মাখার গর্ভে পেরশ নামে একটি ছেলের জন্ম হয়েছিল। তার ভাইয়ের নাম ছিল শেরশ এবং তার ছেলেদের নাম ছিল ঊলম ও রেকম।
17
ঊলমের একজন ছেলের নাম বদান। এরা ছিল গিলিয়দের বংশের লোক। গিলিয়দ মাখীরের ছেলে আর মাখীর মনঃশির ছেলে।
18
গিলিয়দের বোন হম্মোলেকতের ছেলেরা হল ঈশ্হোদ, অবীয়েষর ও মহলা।
19
শমীদার ছেলেরা হল অহিয়ন, শেখম, লিক্হি ও অনীয়াম।
20
ইফ্রয়িমের একজন ছেলের নাম শূথেলহ, শূথেলহের ছেলে বেরদ, বেরদের ছেলে তহৎ, তহতের ছেলে ইলিয়াদা, ইলিয়াদার ছেলে তহৎ,
21
তহতের ছেলে সাবদ এবং সাবদের ছেলে শূথেলহ। ইফ্রয়িমের আরও দুই ছেলের নাম ছিল এৎসর ও ইলিয়দ। দেশে জন্মগ্রহণকারী গাতের লোকদের হাতে তারা মারা পড়েছিল, কারণ তারা গাতীয়দের পশু চুরি করবার জন্য গাতে গিয়েছিল।
22
তাদের বাবা ইফ্রয়িম অনেক দিন পর্যন্ত তাদের জন্য শোক করেছিলেন। তাঁর আত্মীয়স্বজনেরা তাঁকে সান্ত্বনা দিতে এসেছিল।
23
এর পর তিনি স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হলে পর তাঁর স্ত্রী গর্ভবতী হলেন এবং একটি ছেলের জন্ম হল। ইফ্রয়িম তার নাম রাখলেন বরীয়, কারণ তাঁর পরিবারে তখন অমঙ্গল নেমে এসেছিল।
24
তাঁর মেয়ের নাম ছিল শীরা। শীরা উপরের ও নীচের বৈৎ হোরোণ ও উষেণশীরা গড়ে তুলেছিল।
25
বরীয়ের ছেলে রেফহ, রেফহের ছেলে রেশফ, রেশফের ছেলে তেলহ, তেলহের ছেলে তহন,
26
তহনের ছেলে লাদন, লাদনের ছেলে অম্মীহূদ, অম্মীহূদের ছেলে ইলীশামা,
27
ইলীশামার ছেলে নূন ও নূনের ছেলে যিহোশূয়।
28
বৈথেল ও তার চারপাশের গ্রামগুলো, পূর্ব দিকে নারণ, পশ্চিম দিকে গেষর ও তার চারপাশের গ্রামগুলো ছিল ইফ্রয়িমের জমিজমা ও বাসস্থান। এছাড়া শিখিম ও তার গ্রামগুলো থেকে অয়া ও তার গ্রামগুলো পর্যন্ত ছিল তাদের এলাকা।
29
মনঃশির সীমানা বরাবর বৈৎশান, তানক, মগিদ্দো, দোর ও এগুলোর চারপাশের সব গ্রামও ছিল তাদের। ইস্রায়েলের ছেলে যোষেফের বংশধরেরা এই সব শহরে ও গ্রামে বাস করত।
30
আশেরের ছেলেরা হল যিম্ন, যিশ্বাঃ, যিশ্বী ও বরীয়। সেরহ ছিল তাদের বোন।
31
বরীয়ের ছেলেরা হল হেবর ও মল্কীয়েল। মল্কীয়েল ছিল বির্ষোতের বাবা।
32
হেবরের ছেলেরা হল যফ্লেট, শোমের ও হোথম। শূয়া ছিল তাদের বোন।
33
যফ্লেটের ছেলেরা হল পাসক, বিম্হল ও অশ্বৎ।
34
শেমরের ছেলেরা হল অহি, রোগহ, যিহুব্ব ও অরাম।
35
শেমরের ভাই হেলমের ছেলেরা হল শোফহ, যিম্ন, শেলশ ও আমল।
36
শোফহের ছেলেরা হল সূহ, হর্ণেফর, শূয়াল, বেরী, যিম্র,
37
বেৎসর, হোদ, শম্ম, শিল্শ, যিত্রণ ও বেরা।
38
যেথরের ছেলেরা হল যিফুন্নি, পিসপ ও অরা।
39
উল্লের ছেলেরা হল আরহ, হন্নীয়েল ও রিৎসিয়।
40
আশের গোষ্ঠীর এই সব লোকেরা ছিলেন নিজের নিজের বংশের নেতা। এঁরা প্রত্যেকে ছিলেন বাছাই করা শক্তিশালী যোদ্ধা ও প্রধান নেতা। আশেরের বংশ তালিকায় লেখা লোকদের মধ্যে যুদ্ধে যাবার জন্য প্রস্তুত লোকের সংখ্যা ছিল ছাব্বিশ হাজার।
8
1
বিন্যামীনের বড় ছেলে হল বেলা, দ্বিতীয় অস্বেল, তৃতীয় অহর্হ,
2
চতুর্থ নোহা ও পঞ্চম রাফা।
3
বেলার ছেলেরা হল অদ্দর, গেরা, অবীহূদ,
4
অবীশূয়, নামান, আহোহ,
5
গেরা, শফূফন ও হূরম।
6
এহূদের ছেলেরা হল নামান, অহিয় ও গেরা। এঁরা ছিলেন গেবায় বাসকারী লোকদের বংশগুলোর নেতা।
7
গেরা তাঁর দুই ভাইকে গেবা থেকে জোর করে বের করে দিলেন; তাতে তাঁরা মানহতে গিয়ে বাস করতে লাগলেন। গেরা ছিল উষঃ ও অহীহূদের বাবা।
8
আর তিনি তাঁদেরকে বিদায় করলে পর শহরয়িম মোয়াব ক্ষেত্রে ছেলেদের জন্ম দিলেন। তার দুই স্ত্রী হূশীম ও বারা।
9
মোয়াব দেশে তার অন্য স্ত্রী হোদশের গর্ভে তার এই সব ছেলেদের জন্ম হয়েছিল, যোবব, সিবিয়, মেশা, মল্কম,
10
যিয়ূশ, শখিয় ও মির্ম। এঁরা ছিলেন নিজের নিজের বংশের প্রধান।
11
হূশীমের গর্ভে তার আরও দুই ছেলে অহীটূব ও ইল্পালের জন্ম হয়েছিল।
12
ইল্পালের ছেলেরা হল এবর, মিশিয়ম, এবং ওনো, লোদ ও তার উপনগর সকলের পত্তনকারী শেমদ এবং বরীয় ও শেমা।
13
বরীয় ও শেমা ছিলেন অয়ালোনে বাসকারী লোকদের বংশগুলোর নেতা। গাতের লোকদের এঁরা তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
14
বরীয়ের ছেলেরা হল অহিয়ো,
15
শাশক, যিরেমোৎ, সবদিয়,
16
অরাদ, এদর, মীখায়েল, যিশ্পা ও যোহ।
17
ইল্পালের ছেলেরা হল সবদিয়, মশুল্লম,
18
হিষ্কি, হেবর, যিশ্মরয়, যিষ্লিয় ও যোবব।
19
শিমিয়ির ছেলেরা হল যাকীম,
20
সিখ্রি, সব্দি, ইলিয়ৈনয়, সিল্লথয়,
21
ইলীয়েল, অদায়া, বরায়া ও শিম্রৎ।
22
শাশকের ছেলেরা হল যিশ্পন,
23
এবর, ইলীয়েল, অব্দোন,
24
সিখ্রি, হানন, হনানিয়,
25
এলম, অন্তোথিয়, যিফদিয় ও পনূয়েল।
26
যিরোহমের ছেলেরা হল শিম্শরয়,
27
শহরিয়, অথলিয়, যারিশিয়, এলিয় ও সিখ্রি।
28
এঁরা সবাই ছিলেন নিজের নিজের বংশের নেতা এবং বংশ তালিকা অনুসারে এঁরা প্রত্যেকে ছিলেন প্রধান লোক। এঁরা যিরূশালেমে বাস করতেন।
29
যিয়ীয়েল গিবিয়োনে বাস করত। তার স্ত্রীর নাম ছিল মাখা;
30
তার প্রথম ছেলে হল অব্দোন, তারপর সূর, কীশ, বাল, নাদব,
31
গদোর, অহিয়ো ও সখর।
32
মিক্লোতের ছেলে হল শিমিয়। এরাও যিরূশালেমে তাদের বংশের লোকদের কাছে বাস করত।
33
নেরের ছেলে কীশ আর কীশের ছেলে শৌল। শৌলের ছেলেরা হল যোনাথন, মল্কীশূয়, অবীনাদব ও ইশ্বাল।
34
যোনাথনের ছেলে মরীব্বাল ও মরীব্বালের ছেলে মীখা।
35
মীখার ছেলেরা হল পিথোন, মেলক, তরেয় ও আহস।
36
আহসের ছেলে যিহোয়াদা, যিহোয়াদার ছেলেরা হল আলেমৎ, অস্মাবৎ ও সিম্রি। সিম্রির ছেলে মোৎসা,
37
মোৎসার ছেলে বিনিয়া, বিনিয়ার ছেলে রফায়, রফায়ের ছেলে ইলীয়াসা ও ইলীয়াসার ছেলে আৎসেল।
38
আৎসেলের ছয়জন ছেলের নাম হল অস্রীকাম, বোখরূ, ইশ্মায়েল, শিয়রিয়, ওবদিয় ও হানান।
39
আৎসেলের ভাই এশকের ছেলেদের মধ্যে প্রথম হল ঊলম, দ্বিতীয় যিয়ূশ ও তৃতীয় এলীফেলট।
40
ঊলমের ছেলেরা শক্তিশালী যোদ্ধা ছিল। এরা ধনুকের ব্যবহার জানত। তাদের অনেক ছেলে ও নাতি ছিল। তাদের সংখ্যা ছিল একশো পঞ্চাশ জন। এরা সকলে বিন্যামীন বংশধর।
9
1
এইভাবে সমস্ত ইস্রায়েলের বংশাবলি লেখা হল, আর দেখ, তা “ইস্রায়েলীয় রাজাদের বইতে” সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের বংশ তালিকা লেখা রয়েছে। পরে যিহূদার লোকদের অবিশ্বস্ততার জন্য তাদের বাবিলে বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
যিরুশালেমে বসবাসকারীদের তালিকা।
2
নিজেদের নানা শহরে যারা প্রথমে নিজের নিজের অধিকারে বাস করল, তারা এই ইস্রায়েলীয়রা, যাজকরা, লেবীয়রা ও নথীনীয়রা।
3
যিহূদা, বিন্যামীন, ইফ্রয়িম ও মনঃশি গোষ্ঠীর মধ্যে এই লোকেরা যিরূশালেমে বাস করতে লাগল।
4
যিহূদার ছেলে পেরসের বংশের উথয়। উথয় ছিল অম্মীহূদের ছেলে, অম্মীহূদ অম্রির ছেলে, অম্রি ইম্রির ছেলে, ইম্রি বানির ছেলে ও বানি পেরসের ছেলে।
5
শীলোনীয়দের মধ্যে বড় অসায় ও তার ছেলেরা।
6
সেরহের ছেলেদের মধ্যে যুয়েল ও তাদের ভাইরা, এরা ছয়শো নব্বই জন।
7
বিন্যামীন গোষ্ঠীর মধ্যে মশুল্লমের ছেলে সল্লু, মশুল্লম হোদবিয়ের ছেলে, তিনি হস্নূয়ের ছেলে।
8
যিরোহমের ছেলে যিব্নিয়। মিখ্রির নাতি, অর্থাৎ উষির ছেলে এলা। শফটিয়ের ছেলে মশুল্লম। তাঁর পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল রূয়েল ও যিব্নিয়।
9
এরা ও এদের ভাইরা নিজের নিজের বংশ অনুসারে নয়শো ছাপান্ন জন। এরা সবাই নিজের নিজের বংশের নেতা ছিল।
10
যাজকদের মধ্যে যিদয়িয়, যিহোয়ারীব, যাখীন;
11
হিল্কিয়ের ছেলে অসরিয়। অসরিয় ছিলেন ঈশ্বরের ঘরের ভার পাওয়া লোকদের মধ্যে প্রধান। তাঁর পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিলেন মশুল্লম, সাদোক, মরায়োৎ ও অহীটূব।
12
যিরোহমের ছেলে অদায়া। তাঁর পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল পশ্হূর ও মল্কিয়। অদীয়েলের ছেলে মাসয়। তাঁর পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল যহসেরা, মশুল্লম, মশিল্লমীত ও ইম্মের।
13
এঁরা ছিলেন নিজের নিজের বংশের নেতা। এরা ও এদের ভাইরা এক হাজার সাতশো ষাট জন। এঁরা ঈশ্বরের গৃহের সেবাকাজের ভারপাওয়া যোগ্য লোক।
14
লেবীয়দের মধ্যে হশূবের ছেলে শময়িয়। তার পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল অস্রীকাম, হশবিয় ও মরারি।
15
বকবকর, হেরশ, গালল ও মীখার ছেলে মত্তনিয়। মত্তনিয়ের পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল সিখ্রি ও আসফ।
16
শময়িয়ের ছেলে ওবদিয়। তার পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল গালল ও যিদূথূন। ইল্কানার নাতি, অর্থাৎ আসার ছেলে বেরিখিয়। সে নটোফাতীয়দের গ্রামে বাস করত।
17
রক্ষীদের মধ্যে শল্লুম, অক্কুব, টল্মোন, অহীমান ও তাদের ভাইরা, এদের মধ্যে শল্লুম প্রধান।
18
এরাই এ পর্যন্ত পূর্ব দিকে অবস্থিত রাজদ্বারে থাকত, এই লোকেরা ছিল লেবি গোষ্ঠীর ছাউনির রক্ষী। কোরির ছেলে শল্লুম ছিলেন তাদের নেতা। তাঁর পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল ইবীয়াসফ ও কোরহ।
19
শল্লুম ও তাঁর বংশের লোকদের, অর্থাৎ কোরহীয়দের উপর মন্দিরের দরজাগুলো পাহারা দেবার ভার ছিল। এরা এতদিন পর্যন্ত রাজবাড়ীর পূর্ব দিকের দরজায় থাকত। তাদের পূর্বপুরুষদের উপরেও ঠিক এইভাবেই সদাপ্রভুর আবাসতাঁবুর দরজা পাহারা দেবার ভার ছিল।
20
সেই সময় ইলিয়াসরের ছেলে পীনহসের উপর রক্ষীদের দেখাশোনার ভার ছিল এবং সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
21
মশেলেমিয়ের ছেলে সখরিয় মিলনতাঁবুর দরজার পাহারাদার ছিল।
22
দরজাগুলো পাহারা দেবার জন্য যাদের বেছে নেওয়া হয়েছিল তাদের সংখ্যা ছিল মোট দুইশো বারো। তাদের গ্রামগুলোতে যে সব বংশ তালিকা ছিল সেখানে তাদের নাম লেখা হয়েছিল। দায়ূদ ও শমূয়েল দর্শক এই লোকদের দায়িত্বপূর্ণ দারোয়ানের কাজে নিযুক্ত করেছিলেন।
23
তাদের ও তাদের বংশের লোকেরা সদাপ্রভুর ঘরের, অর্থাৎ আবাসতাম্বুর দরজাগুলো পাহারা দিত।
24
পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ এই চারদিকেই রক্ষীরা পাহারা দিত।
25
গ্রাম থেকে তাদের ভাইদেরও পালা অনুসারে এসে সাত দিন করে তাদের কাজে সাহায্য করতে হত।
26
যে চারজন লেবীয় প্রধান রক্ষী ছিল তাদের উপর ছিল ঈশ্বরের ঘরের ধনভাণ্ডারের কামরাগুলোর ভার।
27
তারা ঈশ্বরের ঘরের কাছে বাস করত, কারণ সেই ঘর রক্ষা করবার ভার তাদের উপর ছিল, আর রোজ সকালে ঘরের দরজাও তাদের খুলে দিতে হত।
28
লেবীয়দের মধ্যে কয়েকজনের উপর উপাসনাঘরের সেবাকাজে ব্যবহার করা জিনিসপত্র রক্ষা করবার ভার ছিল। সেগুলো বের করবার ও ভিতরে আনবার সময় তারা গুণে দেখত।
29
অন্যদের উপর ছিল উপাসনাঘরের আসবাবপত্র এবং সমস্ত পাত্র, ময়দা ও আংগুরের রস, তেল, কুন্দুরু ও সব সুগন্ধি মশলা দেখাশোনা করবার ভার।
30
সুগন্ধি মশলাগুলো মেশাবার ভার ছিল কয়েকজন যাজক সন্তানদের উপর।
31
লেবীয়দের মধ্যে কোরহীয় শল্লুমের বড় ছেলে মত্তথিয়ের উপর উৎসর্গের রুটি তৈরী করার ভার দেওয়া হয়েছিল।
32
প্রত্যেক বিশ্রামবারে টেবিলের উপর যে দর্শনরুটি সাজিয়ে রাখা হত তা তৈরী করবার ভার ছিল লেবীয়দের মধ্যে কয়েকজন কহাতীয়ের উপর।
33
লেবিগোষ্ঠীর বংশনেতারা যাঁরা গায়ক ছিল তাঁরা উপাসনাঘরের কামরাগুলোতে থাকতেন। গানবাজনার কাজে তাঁরা দিনরাত ব্যস্ত থাকতেন বলে তাঁদের উপর অন্য কোনো কাজের ভার দেওয়া হয়নি।
34
বংশ তালিকা অনুসারে এঁরা সবাই ছিলেন লেবীয় গোষ্ঠীর প্রধান নেতা। এঁরা যিরূশালেমে বাস করতেন।
শৌলের বংশ তালিকা ও মৃত্যু
35
গিবিয়োনের বাবা যিয়ীয়েল গিবিয়োনে বাস করতেন। তার স্ত্রীর নাম ছিল মাখা।
36
তার বড় ছেলের নাম অব্দোন, তার পরে সূর, কীশ, বাল, নের, নাদব,
37
গাদোর, অহিয়ো, সখরিয় ও মিক্লোৎ।
38
মিক্লোতের ছেলে শিমিয়াম। তারা তাদের ভাইদের কাছে যিরূশালেমে বাস করত।
39
নেরের ছেলে কীশ, কীশের ছেলে শৌল এবং শৌলের ছেলেরা হল যোনাথন, মল্কীশূয়, অবীনাদব ও ইশ্বাল।
40
যোনাথনের ছেলে মরীব্বাল, মরীব্বালের ছেলে মীখা
41
মীখার ছেলেরা হল পিথোন, মেলক, তহরেয় ও আহস।
42
আহসের ছেলে যারঃ, যারের ছেলেরা হল আলেমৎ, অস্মাবৎ ও সিম্রি। সিম্রির ছেলে মোৎসা,
43
মোৎসার ছেলে বিনিয়া, বিনিয়ার ছেলে রফায়, রফায়ের ছেলে ইলীয়াসা এবং ইলীয়াসার ছেলে আৎসেল।
44
আৎসেলের ছয়জন ছেলের নাম হল অস্রীকাম, বোখরূ, ইশ্মায়েল, শিয়রিয়, ওবদিয় ও হানান। এরা আৎসেলের ছেলে ছিল।
10
1
একবার পলেষ্টীয়েরা ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল আর ইস্রায়েলীয়েরা পলেষ্টীয়দের সামনে থেকে পালিয়ে গেল এবং গিল্বোয় পর্বতে আহত হয়ে পড়তে লাগল।
2
আর পলেষ্টীয়েরা শৌল ও তাঁর ছেলেদের পিছনে পিছনে তাড়া করে তাঁর ছেলে যোনাথন, অবীনাদব ও মল্কীশূয়কে মেরে ফেলল।
3
তারপর শৌলের বিরুদ্ধে আরও ভীষণভাবে যুদ্ধ চলতে লাগল। ধনুকধারীরা তাকে দেখতে পেল। ধনুকধারীদের কারণে তাঁর ভীষণ ভয় উপস্থিত হল।
4
শৌল তখন তাঁর অস্ত্র বহনকারী লোকটিকে বললেন, “তোমার তলোয়ার বের কর এবং আমার দেহে বিঁধিয়ে দাও; তা না হলে ঐ অচ্ছিন্নত্বক লোকেরা এসে আমাকে অপমান করবে।” কিন্তু তাঁর অস্ত্র বহনকারী লোকটি তা করতে রাজী হল না, কারণ সে খুব ভয় পেয়েছিল। তখন শৌল তাঁর নিজের তলোয়ার নিয়ে নিজেই তার উপরে পড়লেন।
5
শৌল মারা গেছেন দেখে তাঁর অস্ত্র বহনকারীও নিজের তলোয়ারের উপর পড়ে মারা গেল।
6
এভাবে শৌল, তাঁর তিন ছেলে এবং তাঁর পরিবারের লোকেরা এক সঙ্গে মারা গেলেন।
7
যেসব ইস্রায়েলীয় লোক সেই সময় উপত্যকায় ছিল, তারা যখন দেখল যে, লোকেরা পালিয়ে গেছে এবং শৌল ও তাঁর ছেলেরা মারা পড়েছেন তখন তারাও তাদের নগরগুলো ছেড়ে পালিয়ে গেল, আর পলেষ্টীয়েরা এসে সেই সব নগরে বাস করতে লাগল।
8
পরের দিন পলেষ্টীয়েরা মৃত লোকদের সব কিছু লুট করতে এসে দেখল গিলবোয় পর্বতের উপরে শৌল ও তাঁর ছেলেদের মৃতদেহ পড়ে আছে।
9
তখন তারা শৌলের মাথা কেটে নিল এবং তাঁর সাজ পোশাক ও অস্ত্রশস্ত্র খুলে নিল। এই খবর তাদের সমস্ত দেব দেবতা ও লোকদের কাছে ঘোষণা করবার জন্য তারা পলেষ্টীয় দেশের সব জায়গায় সেগুলো পাঠিয়ে দিল।
10
তারপর তারা শৌলের অস্ত্রশস্ত্র তাদের দেবতাদের মন্দিরে রাখল আর তার মাথাটা দাগোন দেবতার মন্দিরে টাঙ্গিয়ে দিল।
11
পলেষ্টীয়েরা শৌলের প্রতি যা করেছে যাবেশ গিলিয়দের সমস্ত লোক তা শুনতে পেল।
12
তখন সেখানকার বীর সৈন্যেরা গিয়ে শৌল ও তাঁর ছেলেদের মৃতদেহগুলো যাবেশে নিয়ে এল। যাবেশের এলা গাছের তলায় তারা তাঁদের হাড়গুলো কবর দিল এবং সাত দিন উপবাস করল।
13
সদাপ্রভুর প্রতি অবিশ্বস্ত হয়েছিলেন বলে শৌল মারা গেলেন। তিনি সদাপ্রভুর কথা মেনে চলেন নি; এমন কি, সদাপ্রভুর কাছ থেকে পরামর্শ না চেয়ে তিনি কোনো একজনের কাছে পরামর্শ নিয়েছিলেন যে মন্দ আত্মার থাকে।
14
সেইজন্যই সদাপ্রভু তাঁর মৃত্যু ঘটালেন এবং রাজ্যটা যিশয়ের ছেলে দায়ূদের হাতে তুলে দিলেন।
11
দায়ূদের রাজ্যাভিষেক।
1
ইস্রায়েলীয়েরা সবাই হিব্রোণে দায়ূদের কাছে জড়ো হয়ে বলল, “দেখুন, আমরা আপনার হাড় ও মাংস।
2
এর আগে যখন শৌল রাজা ছিলেন তখন যুদ্ধের সময় আপনিই ইস্রায়েলীয়দের সৈন্য পরিচালনা করতেন; আর আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু আপনাকে বলেছেন যেন আপনিই তাঁর লোকদের, অর্থাৎ ইস্রায়েলীয়দের দেখাশোনা করবেন ও তাদের নেতা হবেন।”
3
এইভাবে ইস্রায়েল দেশের সমস্ত প্রাচীনেরা হিব্রোণে রাজার কাছে এলেন। তখন দায়ূদ সদাপ্রভুকে সাক্ষী রেখে তাঁদের সঙ্গে একটা চুক্তি করলেন, আর শমূয়েলের মধ্য দিয়ে বলা সদাপ্রভুর কথা অনুসারে তাঁরা দায়ূদকে ইস্রায়েল দেশের উপর রাজা হিসাবে অভিষেক করলেন।
4
পরে দায়ূদ ও সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা যিরূশালেমে, অর্থাৎ যিবূষে গেলেন। যিবূষীয়েরা সেখানে বাস করত।
5
তারা দায়ূদকে বলল, “তুমি এখানে ঢুকতে পারবে না।” তবুও দায়ূদ সিয়োনের দুর্গটা অধিকার করলেন। সেটাই দায়ূদ শহর।
6
দায়ূদ বলেছিলেন, “যে লোক প্রথমে যিবূষীয়দের আক্রমণ করবে সেই হবে প্রধান সেনাপতি।” এতে সরূয়ার ছেলে যোয়াব প্রথমে আক্রমণ করতে গেলেন, আর সেইজন্য তাঁকে প্রধান সেনাপতি করা হল।
7
এর পর দায়ূদ সেই দুর্গে বাস করতে লাগলেন; সেইজন্য লোকেরা তাঁর নাম দায়ূদ শহর রাখল।
8
তিনি মিল্লোর কাছে শহর গড়ে তুললেন এবং যোয়াব শহরের বাদবাকী অংশ মেরামত করলেন।
9
দায়ূদ দিনে দিনে আরও মহান হয়ে উঠলেন, কারণ বাহিনীগণের সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
দায়ূদের বীরদের ও তাঁর সঙ্গী ইস্রায়েলীয়দের বিবরণ।
10
সদাপ্রভুর প্রতিজ্ঞা অনুসারে দায়ূদ যাতে গোটা দেশটার উপর তাঁর অধিকার স্থাপন করতে পারেন সেইজন্য তাঁর শক্তিশালী লোকদের মধ্যে যাঁরা প্রধান ছিলেন তারা সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে মিলে তাঁর পক্ষ নিয়ে তাঁর রাজকীয় ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুললেন।
11
দায়ূদের বীরদের সংখ্যা এই; যাশবিয়াম নামে হক্মোনীয়দের একজন ছেলে ছিলেন, ত্রিশ জন বীর যোদ্ধাদের দলের প্রধান। তিনি বর্শা চালিয়ে একই সময়ে তিনশো লোককে মেরে ফেলেছিলেন।
12
তাঁর পরের জন ছিলেন ইলিয়াসর। ইনি ছিলেন অহোহীয় দোদোরের ছেলে। নাম করা তিনজন বীরের মধ্যে ইনি ছিলেন একজন।
13
পলেষ্টীয়েরা যখন যুদ্ধের জন্য পস্ দম্মীমে জড়ো হয়েছিল তখন ইলিয়াসর দায়ূদের সঙ্গে ছিলেন। একটা জায়গায় যবে ভরা একটা ক্ষেতে ইস্রায়েলীয় সৈন্যেরা পলেষ্টীয়দের সামনে থেকে পালিয়ে গেল।
14
তারা সেই ক্ষেতের মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ালেন। তাঁরা সেই ক্ষেতটা রক্ষা করলেন এবং পলেষ্টীয়দের শেষ করে দিলেন। সেই দিন সদাপ্রভু তাঁদের রক্ষা করলেন ও মহাজয় দান করলেন।
15
ত্রিশজন বীরের মধ্যে তিনজন অদুল্লম গুহার কাছে যে পাথরটা ছিল সেখানে দায়ূদের কাছে আসলেন। তখন পলেষ্টীয়দের সৈন্যরা রফায়ীম উপত্যকায় ছাউনি ফেলে ছিল।
16
সেই সময় দায়ূদ দুর্গম জায়গায় ছিলেন আর পলেষ্টীয় সৈন্যদল ছিল বৈৎলেহমে।
17
এমন সময় দায়ূদের খুব পিপাসিত হলেন এবং বললেন, “হায়! কে আমাকে বৈৎলেহমের দরজার কাছের কূয়োর জল এনে পান করতে দেবে?”
18
এই কথা শুনে সেই তিনজন বীর পলেষ্টীয় সৈন্যদলের ভিতর দিয়ে গিয়ে বৈৎলেহমের ফটকের কাছের কূয়াটা থেকে জল তুলে দায়ূদের কাছে নিয়ে গেলেন। কিন্তু দায়ূদ তা পান করতে রাজি হলেন না; তার বদলে তিনি সেই জল সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে ঢেলে ফেলে দিলেন।
19
আর বললেন, “হে ঈশ্বর, আমি যে এই জল খাব তা দূরে থাক্। এই লোকেরা, যারা তাদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে গিয়েছিল তাদের রক্ত কি আমি খাব?” তাঁরা তাঁদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সেই জল এনেছিল বলে দায়ূদ তা পান করতে রাজী হলেন না। সেই তিনজন নাম করা বীর এই সব কাজ করেছিল।
20
যোয়াবের ভাই অবীশয় ছিলেন সেই তিনজনের মধ্যে প্রধান। তিনি বর্শা চালিয়ে তিনশো লোককে মেরে ফেলেছিলেন এবং তিনিও ঐ তিনজনের মত নাম করা হয়ে উঠেছিলেন।
21
তিনি সেই তিনজনের চেয়ে আরও বেশী সম্মান পেয়েছিলেন এবং তাঁদের সেনাপতি হয়েছিলেন, অথচ তিন জনের সমান ছিলেন না।
22
কব্সেলীয় যিহোয়াদার ছেলে বনায় ছিলেন একজন বীর যোদ্ধা। তিনিও বড় বড় কাজ করেছিলেন। মোয়াবীয় অরিয়েলের দুই ছেলেকে তিনি মেরে ফেলেছিলেন। এক তুষার পড়া দিনে তিনি একটা গর্তের মধ্যে নেমে গিয়ে একটা সিংহকে মেরে ফেলেছিলেন।
23
আবার একজন পাঁচ হাত (সাড়ে সাত ফুট) লম্বা মিসরীয়কে তিনি মেরে ফেলেছিলেন। সেই মিসরীয়ের হাতে ছিল তাঁতীর বীমের মত একটা বর্শা, কিন্তু তবুও তিনি লাঠি হাতে তার দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন। সেই মিসরীয়ের হাত থেকে বর্শাটা কেড়ে নিয়ে তিনি সেই বর্শা দিয়ে তাকে মেরে ফেলেছিলেন।
24
যিহোয়াদার ছেলে বনায় এই সব কাজ করলেন। তিনিও সেই তিনজন বীরের মধ্যে নাম করা হয়ে উঠেছিলেন।
25
সেই তিনজনের মধ্যে তাঁকে ধরা না হলেও তিনি ত্রিশজনের থেকে বেশি সম্মানীয় ছিলেন। দায়ূদ তাঁর দেহরক্ষীদের ভার বনায়ের উপরেই দিয়েছিলেন।
26
সেই শক্তিশালী লোকেরা হলেন যোয়াবের ভাই অসাহেল, বৈৎলেহমের দোদোর ছেলে ইল্হানন,
27
হরোরীয় শম্মোৎ, পলোনীয় হেলস,
28
তকোয়ের ইক্কেশের ছেলে ঈরা, অনাথোতের অবীয়েষর,
29
হূশাতীয় সিব্বখয়, অহোহীয় ঈলয়,
30
নটোফাতীয় মহরয়, নটোফাতীয় বানার ছেলে হেলদ,
31
বিন্যামীন গোষ্ঠীর গিবিয়ার রীবয়ের ছেলে ইথয়, পিরিয়াথোনীয় বনায়,
32
গাশের উপত্যকা থেকে হূরয়, অর্বতীয় অবীয়েল,
33
বাহরূমীয় অস্মাবৎ, শাল্বোনীয় ইলীয়হবঃ,
34
গিষোণীয় হাষেমের ছেলেরা, হরারীয় শাগির ছেলে যোনাথন,
35
হরারীয় সাখরের ছেলে অহীয়াম, ঊরের ছেলে ইলীফাল,
36
মখেরাতীয় হেফর, পলোনীয় অহিয়,
37
কর্মিলীয় হিষ্রো, ইষ্বয়ের ছেলে নারয়,
38
নাথনের ভাই যোয়েল, হগ্রির ছেলে মিভর,
39
অম্মোনীয় সেলক, সরূয়ার ছেলে যোয়াবের অস্ত্র বহনকারী বেরোতীয় নহরয়,
40
যিত্রীয় ঈরা, যিত্রীয় গারেব,
41
হিত্তীয় ঊরিয়, অহলয়ের ছেলে সাবদ,
42
রূবেণীয় শীষার ছেলে অদীনা তিনি ছিলেন রূবেণীয়দের নেতা এবং তাঁর সঙ্গে ছিল ত্রিশজন লোক,
43
মাখার ছেলে হানান, মিত্নীয় যোশাফট,
44
অষ্টরোতীয় উষিয়, অরোয়েরীয় হোথমের দুই ছেলে শাম ও যিয়ীয়েল,
45
শিম্রির ছেলে যিদিয়েল ও তাঁর ভাই তীষীয় যোহা,
46
মহবীয় ইলীয়েল, ইল্নামের দুই ছেলে যিরীবয় ও যোশবিয়, মোয়াবীয় যিৎমা,
47
ইলীয়েল, ওবেদ ও মসোবায়ীয় যাসীয়েল।
12
1
কীশের ছেলে শৌলের সামনে থেকে দায়ূদকে দূর করা হলে পর অনেক লোক সিক্লগে দায়ূদের কাছে এসেছিল। যুদ্ধের সময় যে যোদ্ধারা দায়ূদকে সাহায্য করেছিল এরা তাদের মধ্যে ছিল।
2
এরা ধনুকধারী ছিল এবং বাঁ হাতে ও ডান হাতে তীর মারতে ও ফিংগা দিয়ে পাথর ছুঁড়তে পারত। এরা ছিল বিন্যামীন গোষ্ঠীর শৌলের বংশের লোক।
3
অহীয়েষর প্রধান ছিলেন পরে যোয়াশ, এরা গিবিয়াতীয় শমায়ের ছেলে; অস্মাবতের ছেলে যিষীয়েল ও পেলট, বরাখা, অনাথোতীয় যেহূ;
4
গিবিয়োনীয় যিশ্ময়িয়, ইনি সেই ত্রিশজনের মধ্যে একজন নেতা ও ত্রিশজনের ওপরে নিযুক্ত ছিলেন; যিরমিয়, যহসীয়েল, যোহানন, গদেরাথীয় যোষাবদ;
5
ইলিয়ূষয়, যিরীমোৎ, বালিয়, শমরিয়, হরূফীয় শফটিয়;
6
কোরহীয়দের মধ্যে ইল্কানা, যিশিয়, অসরেল, যোয়েষর, যাশবিয়াম;
7
গদোরীয় যিরোহমের ছেলে যোয়েলা ও সবদিয়।
8
গাদীয়দের কিছু লোক নিজেদের দল ছেড়ে মরু এলাকার দুর্গের মত জায়গায় দায়ূদের কাছে এসেছিলেন। তাঁরা ছিলেন যুদ্ধের শিক্ষা পাওয়া শক্তিশালী যোদ্ধা। তাঁরা ঢাল ও বর্শার ব্যবহার জানতেন। তাঁদের মুখ সিংহের মত ভয়ংকর ছিল এবং পাহাড়ী হরিণের মত তাঁরা জোরে দৌড়াতে পারতেন।
9
সেখানে এষর তাদের নেতা ছিলেন, দ্বিতীয় ওবদিয়, তৃতীয় ইলীয়াব,
10
চতুর্থ মিশ্মন্না, পঞ্চম যিরমিয়,
11
ষষ্ঠ অত্তয়, সপ্তম ইলীয়েল,
12
অষ্টম যোহানন, নবম ইল্সাবাদ,
13
দশম যিরমিয় ও একাদশ মগ্বন্নয়।
14
এই গাদীয়েরা ছিলেন সৈন্যদলের সেনাপতি। তাঁদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে ছোট তিনি ছিলেন একাই একশো জনের সমান এবং যিনি সবচেয়ে বড় তিনি ছিলেন একাই হাজার জনের সমান।
15
সেই বছরের প্রথম মাসে যখন যর্দন নদীর জল কিনারা ছাপিয়ে গিয়েছিল তখন এঁরাই পার হয়ে গিয়ে নদীর পূর্ব ও পশ্চিম দিকের উপত্যকায় বসবাসকারী প্রত্যেককে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
16
এছাড়া বিন্যামীন গোষ্ঠীর অন্য লোকেরা এবং যিহূদার কিছু লোক দায়ূদের কাছে দুর্গম জায়গায় এসেছিল।
17
দায়ূদ তাদের সঙ্গে দেখা করতে বের হয়ে এসে বললেন, “আপনারা যদি শান্তির মনোভাব নিয়ে আমাকে সাহায্য করতে এসে থাকেন তবে আমি আপনাদের সঙ্গে এক হতে প্রস্তুত আছি, কিন্তু আমি কোন অন্যায় না করলেও যদি বিশ্বাসঘাতকতা করে শত্রুর হাতে আমাকে তুলে দেবার জন্য এসে থাকেন তবে আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর যেন তা দেখেন এবং আপনাদের তিরস্কার করুন।”
18
যিনি পরে ত্রিশজনের মধ্যে নেতা হয়েছিলেন সেই অমাসয়ের উপর সদাপ্রভুর আত্মা এলেন। তখন তিনি বললেন, “হে দায়ূদ, আমরা তোমারই। হে যিশয়ের ছেলে, আমরা তোমারই পক্ষে। মঙ্গল হোক, তোমার মঙ্গল হোক, মঙ্গল হোক তাদের, যারা আপনাকে সাহায্য করে, কারণ তোমার ঈশ্বরই তোমাকে সাহায্য করেন।” তখন দায়ূদ তাঁদের গ্রহণ করে তাঁর সৈন্যদলের উপর সেনাপতি করলেন।
19
দায়ূদ যখন পলেষ্টীয়দের সঙ্গে শৌলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাচ্ছিলেন তখন মনঃশি গোষ্ঠীর কিছু লোক নিজেদের দল ছেড়ে দায়ূদের কাছে গিয়েছিলেন। অবশ্য দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা পলেষ্টীয়দের সাহায্য করেন নি, কারণ পলেষ্টীয় শাসনকর্তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবার পর দায়ূদকে বিদায় করে দিয়েছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন, “তিনি যদি আমাদের ত্যাগ করে তাঁর মনিব শৌলের সঙ্গে গিয়ে যোগ দেন তবে আমাদের বেঁচে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে।”
20
দায়ূদ সিক্লগে ফিরে যাবার সময় মনঃশি গোষ্ঠীর যে লোকেরা দল ছেড়ে তাঁর কাছে গিয়েছিলেন তাঁরা হলেন অদ্ন, যোষাবদ, যিদীয়েল, মীখায়েল, যোষাবদ, ইলীহূ ও সিল্লথয়। এঁরা ছিলেন মনঃশি গোষ্ঠীর এক এক হাজার সৈন্যের সেনাপতি।
21
অন্যান্য আক্রমণকারী দলগুলোর বিরুদ্ধে এঁরা দায়ূদকে সাহায্য করেছিলেন। এঁরা সবাই ছিলেন শক্তিশালী যোদ্ধা এবং সৈন্যদলের সেনাপতি হলেন।
22
এইভাবে দিনের পর দিন লোকেরা দায়ূদকে সাহায্য করতে আসতে লাগল। শেষে ঈশ্বরের সৈন্যদলের মত তাঁর একটা মস্ত বড় সৈন্যদল গড়ে উঠল।
23
সদাপ্রভুর কথা অনুসারে যুদ্ধ করে শৌলের রাজ্য দায়ূদের হাতে তুলে দেবার জন্য যারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হিব্রোণে দায়ূদের কাছে এসেছিল তাদের সংখ্যা এই,
24
যুদ্ধের সাজে সজ্জিত ঢাল ও বর্শাধারী যিহূদা গোষ্ঠীর ছয় হাজার আটশো জন।
25
শিমিয়োন গোষ্ঠীর সাত হাজার একশো শক্তিশালী যোদ্ধা।
26
লেবি গোষ্ঠীর চার হাজার ছয়শো জন।
27
তাঁদের মধ্যে ছিলেন হারোণের বংশের নেতা যিহোয়াদা, যাঁর সঙ্গে ছিল তিন হাজার সাতশো জন লোক।
28
এছাড়া ছিলেন সাদোক নামে একজন শক্তিশালী যুবক যোদ্ধা ও তাঁর বংশের বাইশজন সেনাপতি।
29
শৌলের নিজের গোষ্ঠীর, অর্থাৎ বিন্যামীন গোষ্ঠীর তিন হাজার জন। কিন্তু এই গোষ্ঠীর বেশীর ভাগ লোক তখনও শৌলের পরিবারের পক্ষে ছিল।
30
ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর বিশ হাজার আটশো শক্তিশালী যোদ্ধা। এরা নিজের নিজের বংশে বিখ্যাত ছিল।
31
মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক বংশের আঠারো হাজার লোক। এই লোকদের নাম করে বলা হয়েছিল যেন তারা এসে দায়ূদকে রাজা করে।
32
ইষাখর গোষ্ঠীর দুইশো জন নেতা। তাঁরা ছিলেন বুদ্ধিমান এবং বুঝতে পারতেন ইস্রায়েলীয়দের কখন কি করা উচিত। তাঁদের সঙ্গে ছিল তাঁদের অধীন নিজেদের গোষ্ঠীর লোকেরা।
33
সবূলূন গোষ্ঠীর পঞ্চাশ হাজার দক্ষ সৈন্য। তারা সব রকম অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতে পারত। তারা সম্পূর্ণ বিশ্বস্তভাবে দায়ূদকে সাহায্য করেছিল।
34
নপ্তালি গোষ্ঠীর এক হাজার সেনাপতি। তাঁদের সঙ্গে ছিল ঢাল ও বর্শাধারী সাঁইত্রিশ হাজার লোক।
35
দান গোষ্ঠীর আটাশ হাজার ছয়শো দক্ষ সৈন্য।
36
আশের গোষ্ঠীর চল্লিশ হাজার দক্ষ সৈন্য।
37
সব রকম অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যর্দনের পূর্ব দিক থেকে এসেছিল এক লক্ষ কুড়ি হাজার লোক। এরা এসেছিল রূবেণ, গাদ ও মনশিঃ গোষ্ঠীর অর্ধেক লোকদের মধ্য থেকে।
38
এরা সকলেই ছিল দক্ষ যোদ্ধা। সমস্ত ইস্রায়েলের উপর দায়ূদকে রাজা করবার জন্য তারা পুরোপুরি মন স্থির করে হিব্রোণে এসেছিল। দায়ূদকে রাজা করবার ব্যাপারে বাদবাকী ইস্রায়েলীয়েরাও একমত হয়েছিল।
39
এই লোকেরা তিন দিন দায়ূদের সঙ্গে থেকে খাওয়া দাওয়া করল। তাদের আত্মীয়রাই তাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করেছিল।
40
এছাড়া ইষাখর, সবূলূন ও নপ্তালি এলাকা থেকেও লোকেরা গাধা, উট, খচ্চর ও বলদের পিঠে করে তাদের জন্য খাবার নিয়ে এসেছিল। ইস্রায়েল দেশের লোকদের মনে আনন্দ ছিল বলে তারা প্রচুর পরিমাণে ময়দা, ডুমুর ও কিশ্মিশের তাল, আঙ্গুর রস, তেল এবং বলদ ও ভেড়া নিয়ে এসেছিল।
13
যিরুশালেমে নিয়ম সিন্দুক নিয়ে আসা। পলেষ্টীয়দের পরাজয়, ইত্যাদি।
1
পরে দায়ূদ সহস্রপতিদের ও শতপতিদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন।
2
তারপর তিনি ইস্রায়েলীয়দের গোটা দলটাকে বললেন, “আপনারা যদি ভাল মনে করেন আর এটাই যদি আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ইচ্ছা হয় তবে আসুন, আমরা ইস্রায়েলের সমস্ত এলাকায় আমাদের বাদবাকী ভাইদের কাছে ও তাদের সঙ্গে যে সব যাজক ও লেবীয়েরা তাদের নগরে আছে তাদের কাছে খবর পাঠিয়ে দিই যেন তারা এসে আমাদের কাছে একত্র হয়।
3
আসুন, আমাদের ঈশ্বরের সাক্ষ্য সিন্দুকটা আমাদের কাছে ফিরিয়ে আনি; শৌলের রাজত্বকালে আমরা তো সিন্দুকটির দিকে কোন মনোযোগ দিইনি।”
4
তখন গোটা সমাজ তা করতে রাজী হল, কারণ সব লোকের কাছে সেটাই উচিত বলে মনে হল।
5
কাজেই কিরিয়ৎ যিয়ারীম থেকে ঈশ্বরের সিন্দুক নিয়ে আসবার জন্য দায়ূদ মিসরের সীহোর নদী থেকে হমাতের সীমা পর্যন্ত সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের একত্র করলেন।
6
যিহূদা দেশের বালা, অর্থাৎ কিরিয়ৎ যিয়ারীম থেকে ঈশ্বর সদাপ্রভুর সিন্দুকটি নিয়ে আসবার জন্য দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গে সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা সেখানে গেলেন। এই সিন্দুকটি সদাপ্রভুর নামে পরিচিত, কারণ তিনি সেখানে করূবদের মাঝখানে থাকেন।
7
লোকেরা অবীনাদবের বাড়ী থেকে ঈশ্বরের সিন্দুকটি বের করে একটা নতুন গাড়ির উপরে বসিয়ে নিয়ে চলল। উষঃ ও অহিয়ো সেই গাড়িটা চালাচ্ছিল,
8
আর দায়ূদ ও সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা সদাপ্রভুর সামনে তাঁদের সমস্ত শক্তি দিয়ে গান গাইছিলেন এবং সুরবাহার, বীণা, খঞ্জনী, করতাল ও তূরী বাজাচ্ছিলেন।
9
তাঁরা কীদোনের খামারের কাছে আসলে পর বলদ দুটো হোচট খেল আর উষঃ সিন্দুকটা ধরবার জন্য হাত বাড়াল।
10
এতে উষের উপর সদাপ্রভু ক্রোধে জ্বলে উঠলেন। সিন্দুকে হাত দেওয়ার দরুন তিনি তাকে আঘাত করলেন। এতে সে ঈশ্বরের সামনেই সেখানে মারা গেল।
11
উষের উপর সদাপ্রভুর এই ক্রোধ দেখে দায়ূদ অসন্তুষ্ট হলেন। আজও সেই জায়গাটাকে বলা হয় পেরষ উষঃ [উষঃ আক্রমণ] রাখলেন; আজও সেই নাম প্রচলিত আছে।
12
দায়ূদ সেই দিন ঈশ্বরকে খুব ভয় করলেন। তিনি বললেন, “ঈশ্বরের সিন্দুকটি তবে কি করে আমার কাছে আনা যাবে?”
13
সিন্দুকটি তিনি দায়ূদ শহরে নিজের কাছে নিয়ে গেলেন না, তিনি সেটি নিয়ে গাতীয় ওবেদ ইদোমের বাড়ীতে রাখলেন।
14
ঈশ্বরের সিন্দুকটি তিন মাস ওবেদ ইদোমের বাড়ীতে তার পরিবারের কাছে থাকল; এতে সদাপ্রভু তার পরিবারকে ও তার সব কিছুকে আশীর্বাদ করলেন।
14
1
পরে সোরের রাজা হীরম দায়ূদের কাছে কয়েকজন লোক পাঠিয়ে দিলেন, তাদের সঙ্গে পাঠালেন দায়ূদের জন্য রাজবাড়ী তৈরী করবার উদ্দেশ্যে এরস কাঠ, রাজমিস্ত্রি ও ছুতার মিস্ত্রি।
2
তখন দায়ূদ বুঝতে পারলেন যে, সদাপ্রভু ইস্রায়েলের উপর তাঁর রাজপদ স্থির করেছেন এবং তাঁর লোকদের, অর্থাৎ ইস্রায়েলীয়দের জন্য তাঁর রাজ্যের অনেক উন্নতি করেছেন।
3
দায়ূদ যিরূশালেমে আরও স্ত্রী গ্রহণ করলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ের জন্ম হল।
4
যিরূশালেমে তাঁর যে সব সন্তানের জন্ম হয়েছিল তাদের নাম হল শম্মূয়, শোবব, নাথন, শলোমন,
5
যিভর, ইলীশূয়, ইল্পেলট,
6
নোগহ, নেফগ, যাফিয়,
7
ইলীশামা, বীলিয়াদা ও ইলীফেলট।
8
পলেষ্টীয়েরা যখন শুনতে পেল যে, গোটা ইস্রায়েলের উপরে দায়ূদকে রাজপদে অভিষেক করা হয়েছে তখন তারা সমস্ত সৈন্য নিয়ে তাঁর খোঁজে বেরিয়ে এল; তা শুনে দায়ূদ তাদের বিরুদ্ধে বের হলেন।
9
পলেষ্টীয়েরা এসে রফায়ীম উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়ল।
10
তখন দায়ূদ ঈশ্বরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করব? তুমি কি আমার হাতে তাদের তুলে দেবে?” উত্তরে সদাপ্রভু বললেন, “যাও, তাদের আমি তোমার হাতে তুলে দেব।”
11
তখন দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা বাল্ পরাসীমে গিয়ে তাদের হারিয়ে দিলেন। দায়ূদ বললেন, “ঈশ্বর জলের বাঁধ ভাঙ্গার মত করে আমার হাত দিয়ে আমার শত্রুদের ভেঙ্গে ফেললেন।” এইজন্যই সেই জায়গার নাম হল বাল্ পরাসীম [ভাঙ্গা জায়গা] রাখা হল।
12
পলেষ্টীয়েরা তাদের দেবমূর্তিগুলো সেখানে ফেলে গিয়েছিল। দায়ূদের হুকুমে লোকেরা সেগুলো আগুনে পুড়িয়ে দিল।
13
পলেষ্টীয়েরা আবার এসে সেই উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়ল।
14
তখন দায়ূদ আবার ঈশ্বরের কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, আর উত্তরে ঈশ্বর তাঁকে বললেন, “তোমরা সোজাসুজি তাদের দিকে যেয়ো না, বরং তাদের পিছন দিক থেকে বাঁকা গাছগুলোর সামনে তাদের আক্রমণ কর।
15
বাঁকা গাছগুলোর মাথায় যখন তুমি সৈন্যদলের চলবার মত শব্দ শুনবে তখনই তুমি যুদ্ধের জন্য বেরিয়ে পড়বে, এর মানে হল, পলেষ্টীয় সৈন্যদের আঘাত করবার জন্য ঈশ্বর তোমার আগে আগে গেছেন।”
16
ঈশ্বরের আদেশ মতই দায়ূদ কাজ করলেন; তারা গিবিয়োন থেকে গেষর পর্যন্ত সমস্ত পথে পলেষ্টীয় সৈন্যদেরকে আঘাত করল।
17
এইভাবে দায়ূদের সুনাম সব দেশে ছড়িয়ে পড়ল, আর সদাপ্রভু সব জাতির মধ্যে তাঁর সম্বন্ধে একটা ভয়ের ভাব জাগিয়ে দিলেন।
15
1
দায়ূদ শহরে নিজের জন্য ঘর বাড়ী তৈরী করবার পর দায়ূদ ঈশ্বরের সিন্দুকের জন্য একটা জায়গা প্রস্তুত করে সেখানে একটা তাঁবু খাটালেন।
2
তারপর তিনি বললেন, “ঈশ্বরের সিন্দুক লেবীয়েরা ছাড়া আর কেউ বহন করতে পারবে না, কারণ সদাপ্রভুর সিন্দুক বহন করবার জন্য এবং চিরকাল তাঁর সেবা করবার জন্য সদাপ্রভু তাদেরই মনোনীত করেছেন।”
3
সদাপ্রভুর সিন্দুকের জন্য দায়ূদ যে জায়গা প্রস্তুত করেছিলেন সেখানে সিন্দুকটি আনবার জন্য তিনি সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের যিরূশালেমে জড়ো করলেন।
4
তিনি হারোণের বংশের যে লোকদের ও যে লেবীয়দের ডেকে জড়ো করলেন তাঁরা হলেন,
5
কহাতের বংশের লোকদের মধ্য থেকে নেতা ঊরীয়েল এবং তাঁর ভাইয়েরা একশো কুড়ি জন;
6
মরারির বংশের লোকদের মধ্য থেকে নেতা অসায় এবং তাঁর ভাইয়েরা দুইশো কুড়িজন;
7
গের্শোনের বংশের লোকদের মধ্য থেকে নেতা যোয়েল এবং তাঁর ভাইয়েরা একশো ত্রিশজন;
8
ইলীষাফণের বংশের লোকদের মধ্য থেকে নেতা শময়িয় এবং তাঁর ভাইয়েরা দুইশো জন;
9
হিব্রোণের বংশের লোকদের মধ্য থেকে নেতা ইলীয়েল এবং তাঁর ভাইয়েরা আশিজন;
10
উষীয়েলের বংশের লোকদের মধ্য থেকে নেতা অম্মীনাদব এবং তাঁর ভাইয়েরা একশো বারোজন।
11
তারপর দায়ূদ পুরোহিত সাদোক ও অবিয়াথরকে এবং লেবীয় ঊরীয়েল, অসায়, যোয়েল, শময়িয়, ইলীয়েল ও অম্মীনাদবকে ডেকে পাঠালেন।
12
তিনি তাঁদের বললেন, “আপনারা হলেন লেবি গোষ্ঠীর বিভিন্ন বংশের নেতা; আপনারা ও আপনাদের সঙ্গী লেবীয়েরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নিজেদের আলাদা করে নেবেন, যাতে যে জায়গা আমি প্রস্তুত করে রেখেছি সেই জায়গায় আপনারা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সিন্দুকটি এনে রাখতে পারেন।
13
প্রথমবার আপনারা সেটি আনেন নি বলে আমাদের উপর আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু ক্রোধে জ্বলে উঠেছিলেন। তাঁর আদেশ অনুসারে কিভাবে সেটি আনতে হবে আমরা তাঁর কাছে তা জানতে চাই নি।”
14
এতে যাজকেরা ও লেবীয়েরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নিজেদের পবিত্র করে নিলেন যাতে তাঁরা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সিন্দুকটি নিয়ে আসতে পারেন।
15
সদাপ্রভুর নির্দেশ মত মোশির আদেশ অনুসারে লেবীয়েরা ঈশ্বরের সিন্দুকটি বহন করবার ডাণ্ডা কাঁধের উপর নিয়ে সেটি নিয়ে আসলেন।
16
দায়ূদ লেবীয়দের নেতাদের বললেন যে, “তারা যেন বাদ্যযন্ত্র, অর্থাৎ বীণা, সুরবাহার ও করতাল বাজিয়ে আনন্দের গান গাইবার জন্য তাঁদের গায়ক ভাইদের নিযুক্ত করেন।”
17
কাজেই লেবীয়েরা যোয়েলের ছেলে হেমনকে ও তাঁর বংশের লোকদের মধ্য থেকে বেরিখিয়ের ছেলে আসফকে এবং তাঁদের গোষ্ঠী ভাই মরারীয়দের মধ্য থেকে কূশায়ার ছেলে এথনকে নিযুক্ত করলেন।
18
তাঁদের সঙ্গে নিযুক্ত করা হল তাঁদের বংশের দ্বিতীয় শ্রেণীর আত্মীয়দের। তারা হল সখরিয়, বেন, যাসীয়েল, শমীরামোৎ, যিহীয়েল, উন্নি, ইলীয়াব, বনায়, মাসেয়, মত্তিথিয়, ইলীফলেহূ, মিক্নেয় এবং ওবেদ ইদোম ও যিয়ীয়েল নামে দরজার দুইজন পাহারাদার।
19
উঁচু সুরে পিতলের করতাল বাজাবার জন্য নিযুক্ত করা হলো গায়ক হেমন, আসফ ও এথনের উপর।
20
বীণা বাজাবার ভার পড়ল সখরিয়, অসীয়েল, শমীরামোৎ, যিহীয়েল, উন্নি, ইলীয়াব, মাসেয় ও বনায়ের উপর।
21
নীচু সুরে সুরবাহার বাজাবার ভার পড়ল মত্তিথিয়, ইলীফলেহূ, মিক্নেয়, ওবেদ ইদোম, যিয়ীয়েল ও অসসিয়ের উপর।
22
গান পরিচালনার ভার পড়ল লেবীয় নেতা কননিয়ের উপর। তিনি গানের ওস্তাদ ছিলেন বলে তাঁর উপর গান শেখানোর জন্য দায়িত্ব পড়েছিল।
23
সিন্দুকটি পাহারাদার ছিলেন বেরিখিয়, ইল্কানা।
24
ঈশ্বরের সিন্দুকের সামনে তূরী বাজাবার ভার পড়ল যাজক শবনিয়, যিহোশাফট, নথনেল, অমাসয়, সখরিয়, বনায় ও ইলীয়েষরের উপর এবং ওবেদ ইদোম ও যিহিয় সিন্দুকের পাহারাদার ছিলেন।
25
এর পরে দায়ূদ, ইস্রায়েলের বৃদ্ধ নেতারা আর সৈন্যদলের হাজার সৈন্যের সেনাপতিরা আনন্দ করতে করতে ওবেদ ইদোমের বাড়ী থেকে সদাপ্রভুর সেই ব্যবস্থা সিন্দুকটি আনবার জন্য গেলেন।
26
যে লেবীয়েরা সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিন্দুকটি বয়ে আনছিল ঈশ্বর তাদের পরিচালনা করেছিলেন বলে সাতটা বলদ ও সাতটা ভেড়া উৎসর্গ করা হল।
27
সিন্দুক বহনকারী লেবীয়েরা, গায়কেরা এবং গানের দলের পরিচালক কননিয় মসীনার পাতলা কাপড়ের পোশাক পরেছিল। দায়ূদও মসীনার পাতলা কাপড়ের পোশাক এবং মসীনার এফোদ পরেছিলেন।
28
এইভাবে সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা চিৎকার করতে করতে এবং শিঙ্গা, তূরী, করতাল, বীণা ও সুরবাহার বাজাতে বাজাতে সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিন্দুকটি যিরূশালেমে নিয়ে আসল।
29
সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিন্দুকটি দায়ূদ শহরে ঢুকবার সময় শৌলের মেয়ে মীখল জানলা দিয়ে তা দেখলেন। রাজা দায়ূদকে নাচতে ও আনন্দ করতে দেখে তিনি মনে মনে দায়ূদকে তুচ্ছ করলেন।
16
1
ঈশ্বরের সিন্দুকের জন্য দায়ূদ যে তাঁবু খাটিয়েছিলেন লোকেরা সিন্দুকটি এনে তার ভিতরে রাখল। এর পর ঈশ্বরের সামনে হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উত্সর্গ করা হল।
2
সেই সব উৎসর্গের অনুষ্ঠান করা শেষ হয়ে গেলে পর দায়ূদ সদাপ্রভুর নামে লোকদের আশীর্বাদ করলেন।
3
তারপর তিনি ইস্রায়েলীয় প্রত্যেক স্ত্রীলোক ও পুরুষকে একটা করে রুটি, এক খণ্ড মাংস ও এক তাল কিশমিশ দিলেন।
4
সদাপ্রভুর সিন্দুকের সামনে সেবা কাজের জন্য দায়ূদ কয়েকজন লেবীয়কে নিযুক্ত করলেন যাতে তারা প্রার্থনা করতে, ধন্যবাদ দিতে এবং ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব করতে পারে।
5
এই লোকদের নেতা ছিলেন আসফ, দ্বিতীয় ছিলেন সখরিয়, তারপরে ছিলেন যিয়ীয়েল, শমীরামোৎ, যিহীয়েল, মত্তিথিয়, ইলীয়াব, বনায়, ওবেদ ইদোম ও যিয়ীয়েল। এঁরা বাজাতেন বীণা ও সুরবাহার আর আসফ বাজাতেন করতাল;
6
যাজক বনায় আর যহসীয়েল ঈশ্বরের সেই ব্যবস্থা সিন্দুকের সামনে নিয়মিত ভাবে তূরী বাজাতেন।
7
সেই দিন দায়ূদ প্রথমে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে ধন্যবাদের এই গান গাইবার ভার আসফ ও তাঁর ভাইদের উপর দিলেন:
ঈশ্বরের প্রশংসার জন্য গান।
8
"সদাপ্রভুকে ধন্যবাদ দাও, তাঁর গুণের কথা ঘোষণা কর; তাঁর কাজের কথা অন্যান্য জাতিদের জানাও।
9
তাঁর উদ্দেশ্যে গান গাও, তাঁর প্রশংসা গান কর; তাঁর সব আশ্চর্য্য কাজের কথা বল।
10
তাঁর পবিত্রতার গৌরব কর; যারা সদাপ্রভুকে গভীরভাবে জানতে আগ্রহী তাদের অন্তর আনন্দিত হোক।
11
সদাপ্রভু ও তাঁর শক্তিকে বুঝতে চেষ্টা কর; সব সময় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে আগ্রহী হও।
12
তাঁর আশ্চর্য্য কাজগুলোর কথা মনে রেখো; তাঁর আশ্চর্য্য কাজ ও মুখনির্গত আদেশ সব।
13
হে তাঁর দাস ইস্রায়েলের বংশধরেরা, তাঁর মনোনীত যাকোবের লোকেরা।
14
তিনিই আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু; গোটা দুনিয়া তাঁরই শাসনে চলছে।
15
যে বাক্যের নির্দেশ তিনি দিয়েছিলেন হাজার হাজার বংশের জন্য, তাঁর সেই ব্যবস্থার কথা চিরকাল মনে রেখো।
16
সেই নিয়ম তিনি অব্রাহামের জন্য স্থাপন করেছিলেন আর ইস্হাকের কাছে শপথ করেছিলেন।
17
তিনি তা যাকোবের জন্য বিধি হিসাবে আর ইস্রায়েলের কাছে অনন্তকালীন নিয়ম হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন।
18
তিনি বলেছিলেন, “আমি তোমাকে কনান দেশটা দেব, সেটাই হবে তোমার পাওনা সম্পত্তি।”
19
সেখানে তোমরা সংখ্যায় বেশি ছিলে না, অল্প ছিলে এবং সেখানে বিদেশী ছিলে।
20
তারা এক জাতি থেকে অন্য জাতির কাছে, এক রাজ্য থেকে অন্য লোকদের কাছে বেড়াত।
21
তখন তিনি কাউকে তাদের অত্যাচার করতে দিতেন না। তাদের জন্য তিনি রাজাদের শাস্তি দিতেন,
22
বলতেন, “আমার অভিষিক্ত লোকদের ছোঁবে না; আমার ভাববাদীদের কোনো ক্ষতি করবে না।”
23
পৃথিবীর সব লোক, তোমরা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাও; তাঁর দেওয়া উদ্ধারের কথা দিনের পর দিন ঘোষণা কর।
24
বিভিন্ন জাতির মধ্যে তাঁর মহিমা ঘোষণা কর; সমস্ত লোকের মধ্যে তাঁর সব আশ্চর্য্য কাজের কথা ঘোষণা কর।
25
সদাপ্রভুই মহান এবং সবার উপরে প্রশংসার যোগ্য; সব দেব দেবতার চেয়ে তিনি বেশী ভয়ার্হ।
26
বিভিন্ন জাতির দেব দেবতারা অসার মাত্র, কিন্তু সদাপ্রভু আকাশমন্ডলের সৃষ্টিকর্তা।
27
তাঁকেই ঘিরে রয়েছে গৌরব ও মহিমা; তাঁর বাসস্থানে রয়েছে শক্তি ও আনন্দ।
28
হে বিভিন্ন জাতির সমস্ত গোষ্ঠী, স্বীকার কর সমস্ত গৌরব ও শক্তি সদাপ্রভুরই।
29
তোমরা স্বীকার কর সমস্ত গৌরব সদাপ্রভুর; উৎসর্গের জিনিস নিয়ে তাঁর সামনে এস। সদাপ্রভুর মহিমাপূর্ণ পবিত্রতায় আরাধনা কর।
30
পৃথিবীর সমস্ত লোক, তোমরা তাঁর সামনে কেঁপে ওঠো। পৃথিবী অটলভাবে স্থাপিত হল, তা কখনও নড়বে না।
31
আকাশমন্ডল আনন্দ করুক, পৃথিবী খুশী হোক; বিভিন্ন জাতির মধ্যে তারা ঘোষণা করুক, “সদাপ্রভুই রাজত্ব করেন।”
32
সাগর ও তার মধ্যেকার সব কিছু গর্জন করুক; মাঠ ও তার মধ্যেকার সব কিছু আনন্দিত হোক।
33
তাহলে বনের গাছপালাও সদাপ্রভুর সামনে আনন্দে গান করবে, কারণ তিনি পৃথিবীর বিচার করতে আসছেন।
34
তোমরা সদাপ্রভুর ধন্যবাদ কর, কারণ তিনি মঙ্গলময়; তাঁর অটল ভালবাসা অনন্তকাল স্থায়ী।
35
তোমরা বল, “হে আমাদের উদ্ধারকর্তা ঈশ্বর, আমাদের উদ্ধার কর; অন্যান্য জাতিদের মধ্য থেকে তুমি আমাদের এক জায়গায় নিয়ে এসে আমাদের রক্ষা কর, যাতে আমরা তোমার পবিত্রতার উদ্দেশ্যে ধন্যবাদ দিতে পারি আর তোমার প্রশংসায় গৌরব করি।
36
সৃষ্টির আগে থেকে অনন্তকাল পর্যন্ত ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব হোক।” এর পর সব লোকেরা বলল, “আমেন, আর সদাপ্রভুর গৌরব করলো।”
37
প্রতিদিনের প্রয়োজন অনুসারে নিয়মিত সেবা কাজের জন্য দায়ূদ সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুকের কাছে আসফ ও তাঁর ভাইদের রেখে গেলেন।
38
তাদের সাহায্য করবার জন্য তিনি ওবেদ ইদোম ও তাঁর আটষট্টি জন লোককেও রেখে গেলেন। যিদূথূনের ছেলে ওবেদ ইদোম ও হোষা ছিলেন দরজার পাহারাদার।
39
দায়ূদ গিবিয়োনের উপাসনার উঁচু স্থানে সদাপ্রভুর আবাস তাঁবুর সামনে যাজক সাদোক ও তাঁর সঙ্গী যাজকদের রেখে গেলেন।
40
এর উদ্দেশ্য ছিল সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের যে ব্যবস্থার আদেশ দিয়েছিলেন তাতে যা যা লেখা ছিল সেই অনুসারে যেন তাঁরা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বেদীর উপর প্রতিদিন সকালে ও বিকালে নিয়মিতভাবে হোমবলির অনুষ্ঠান করতে পারেন।
41
তাঁদের সঙ্গে ছিলেন হেমন ও যিদূথূন আর বাদবাকী লোক, যাদের নাম উল্লেখ করে বেছে নেওয়া হয়েছিল যাতে তারা সদাপ্রভুর অনন্তকাল স্থায়ী অটল ভালবাসার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ দিতে পারে।
42
ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে গান করবার সময়ে তূরী, করতাল ও অন্যান্য বাজনা বাজাবার জন্য হেমন ও যিদূথূনের উপর ভার দেওয়া হল। যিদূথূনের ছেলেরা লোকদের দরজার পাহারাদার হল।
43
এর পর সব লোক যে যার বাড়ীর দিকে রওনা হল এবং দায়ূদ তাঁর পরিবারের লোকদের আশীর্বাদ করবার জন্য বাড়ীতে ফিরে গেলেন।
17
ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার জন্য দায়ূদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
1
নিজের বাড়িতে বাস করবার সময় একদিন দায়ূদ ভাববাদী নাথনকে বললেন, “আমি এখন এরস কাঠের ঘরে বাস করছি কিন্তু সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুকটি রয়েছে একটা তাঁবুর মধ্যে।”
2
উত্তরে নাথন দায়ূদকে বললেন, “আপনার মনে যা আছে আপনি তাই করুন; কারণ ঈশ্বর আপনার সঙ্গে আছেন।”
3
সেই রাতে ঈশ্বরের বাক্য নাথনের কাছে উপস্থিত হলো; তিনি বললেন,
4
“তুমি গিয়ে আমার দাস দায়ূদকে বল যে, সদাপ্রভু বলছেন, ‘আমার থাকবার ঘর তুমি তৈরী করবে না।
5
মিসর দেশ থেকে ইস্রায়েলীয়দের বের করে আনবার দিন থেকে আজ পর্যন্ত আমি কোনো ঘরে বাস করিনি। এক তাঁবু থেকে অন্য তাঁবুতে, এক বাসস্থান থেকে অন্য বাসস্থানে গিয়েছি।
6
যে সব নেতাদের উপর আমি আমার লোকদের পালন করবার ভার দিয়েছিলাম, বিভিন্ন জায়গায় ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে ঘুরে বেড়াবার সময় আমি সেই নেতাদের কি কোনো সময় বলেছি যে, তারা কেন আমার জন্য এরস কাঠের ঘর তৈরী করেনি?’
7
“এখন তুমি আমার দাস দায়ূদকে বল যে, বাহিনীগণের সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, ‘আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের শাসনকর্তা হবার জন্য আমিই তোমাকে পশু চরাবার মাঠ থেকে, ভেড়ার পালের পিছন থেকে নিয়ে এসেছি।
8
তুমি যে সব জায়গায় গিয়েছ আমিও সেখানে তোমার সঙ্গে গিয়েছি এবং তোমার সামনে থেকে তোমার সমস্ত শত্রুদের শেষ করে দিয়েছি। আমি তোমার নাম পৃথিবীর মহান লোকদের নামের মত বিখ্যাত করব।
9
আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের জন্য আমি একটা জায়গা ঠিক করে সেখানেই গাছের মত তাদের লাগিয়ে দেব যাতে তারা নিজেদের জায়গায় শান্তিতে বাস করতে পারে
10
এবং আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের উপর শাসনকর্তা নিযুক্ত করবার পর থেকে দুষ্ট লোকেরা তাদের উপর যে অত্যাচার করে আসছে তারা যেন আর তা করতে না পারে। আমি তোমার সব শত্রুদেরও দমন করব। আমি আরও বলছি যে, আমি সদাপ্রভু তোমার বংশকে গড়ে তুলব।
11
তোমার আয়ু শেষ হলে পর যখন তুমি তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে চলে যাবে তখন আমি তোমার জায়গায় তোমার বংশের একজনকে, তোমার নিজের বংশধরদেরকে বসাব এবং তার রাজ্য স্থির রাখব।
12
তোমার সেই ছেলেই আমার জন্য একটা ঘর তৈরী করবে, আর তার সিংহাসন আমি চিরকাল স্থায়ী করব।
13
আমি হব তার বাবা আর সে হবে আমার ছেলে। আমার ভালবাসা আমি কখনও তার উপর থেকে তুলে নেব না, যেমন করে আমি তুলে নিয়েছিলাম তোমার আগে যে ছিল তার উপর থেকে।
14
আমার ঘরে ও আমার রাজ্যে আমি তাকে চিরকাল স্থির রাখব এবং তার সিংহাসন চিরস্থায়ী হবে।”
15
এই দর্শনের সমস্ত কথাগুলো নাথন দায়ূদকে বললেন।
16
এই সব কথা শুনে রাজা দায়ূদ তাঁবুর ভিতরে গেলেন এবং সদাপ্রভুর সামনে বসে বললেন, “হে ঈশ্বর সদাপ্রভু, আমিই বা কি, আর আমার বংশই বা কি যে, তুমি আমাকে এত দূর পর্যন্ত নিয়ে এসেছ?
17
আর হে ঈশ্বর, এটাও তোমার চোখে যথেষ্ট হয়নি; এর সঙ্গে তোমার দাসের বংশের ভবিষ্যতের কথাও তুমি বলেছ। হে ঈশ্বর সদাপ্রভু, আমি যেন একজন মহান লোক সেই চোখেই তুমি আমাকে দেখেছ।
18
তোমার দাস আমাকে যে সম্মান দেখালে তাতে আমি তোমার কাছে আর বেশী কি বলতে পারি? তুমি তো তোমার দাসকে জান।
19
হে সদাপ্রভু, তোমার দাসের জন্য তোমার ইচ্ছা অনুসারে এই মহৎ কাজ তুমি করেছ আর তোমার দাসকে তা জানিয়েছ।
20
হে সদাপ্রভু, তোমার মত আর কেউ নেই এবং তুমি ছাড়া কোনো ঈশ্বর নেই; আমরা নিজের কানেই এই কথা শুনেছি।
21
তোমার ইস্রায়েল জাতির মত পৃথিবীতে আর কোনো জাতি নেই, যাকে তুমি তোমার নিজের লোক করবার জন্য মুক্ত করেছ। তুমি তাদের মিসর দেশ থেকে মুক্ত করে তাদের সামনে থেকে অন্যান্য জাতিদের দূর করে দিয়েছ। তোমার নিজের গৌরব প্রকাশের জন্য মহৎ ও ভয়ংকর কাজের মধ্য দিয়ে তুমি তা করেছ।
22
তোমার লোক ইস্রায়েলীয়দের তুমি নিজের উদ্দেশ্যে চিরকাল তোমার নিজের লোক করেছ, আর তুমি, হে সদাপ্রভু, তুমি তাদের ঈশ্বর হয়েছ।
23
এখন হে সদাপ্রভু, আমার ও আমার বংশের বিষয়ে তুমি যে প্রতিজ্ঞা করেছ তা চিরকাল রক্ষা কর। তোমার প্রতিজ্ঞা অনুসারেই তা কর।
24
এতে আমার বংশ স্থায়ী হবে এবং চিরকাল তোমার গৌরব হবে। তখন লোকে বলবে, ‘সর্বক্ষমতার অধিকারী সদাপ্রভুই ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর, সত্যিই ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর’! আর তোমার দাস দায়ূদের বংশ তোমার সামনে স্থির থাকবে।
25
হে আমার ঈশ্বর, তুমিই আমার কাছে এই বিষয় প্রকাশ করে বলেছ যে, তুমি আমার মধ্য দিয়ে একটা বংশ গড়ে তুলবে। তাই তোমার কাছে এই প্রার্থনা করতে আমার মনে সাহস হয়েছে।
26
হে সদাপ্রভু, তুমিই ঈশ্বর। এই মঙ্গলের প্রতিজ্ঞা তুমিই তোমার দাসের কাছে করেছ।
27
আমার বংশকে তুমি খুশী হয়ে আশীর্বাদ করেছ যাতে এই বংশ চিরকাল তোমার সামনে থাকে; কারণ, হে সদাপ্রভু তুমিই আশীর্ব্বাদ করেছ এবং চিরকালের জন্য আশীর্ব্বাদযুক্ত।"
18
নানাজাতীয় লোকদের ওপর দায়ূদের জয়লাভ।
1
পরে দায়ূদ পলেষ্টীয়দের আঘাত করে তাদের নিজের অধীনে আনলেন। তিনি পলেষ্টীয়দের হাত থেকে গাৎ ও তার আশেপাশের গ্রামগুলো দখল করে নিলেন।
2
আর তিনি মোয়াবীয়দেরও আঘাত করলেন। তাতে মোয়াবীয়রা দায়ূদের দাস হল এবং উপঢৌকন দিতে লাগলো।
3
পরে সোবার রাজা হদরেষর যখন ইউফ্রেটিস নদী বরাবর তাঁর জায়গাগুলোতে আবার তাঁর কর্তৃত্ব স্থাপন করতে গেলেন তখন দায়ূদ তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করতে হমাৎ পর্যন্ত গেলেন।
4
দায়ূদ তাঁর এক হাজার রথ, সাত হাজার অশ্বারোহী এবং কুড়ি হাজার পদাতিক সৈন্য আটক করলেন। তাদের একশোটা রথের ঘোড়া রেখে তিনি বাকী সব ঘোড়ার পায়ের শিরা কেটে দিলেন।
5
দম্মেশকের অরামীয়েরা যখন সোবার রাজা হদরেষরকে সাহায্য করতে আসল তখন দায়ূদ তাদের বাইশ হাজার লোককে মেরে ফেললেন।
6
দায়ূদ অরাম রাজ্যের দম্মেশকে সৈন্যদল রাখলেন। তাতে অরামীয়েরা তাঁর দাস হলো এবং তাঁকে কর্ দিল। এইভাবে দায়ূদ যে কোনো জায়গায় যেতেন সদাপ্রভু সেখানে তাঁকে জয়ী করতেন।
7
হদরেষরের লোকদের সোনার ঢালগুলো দায়ূদ যিরূশালেমে নিয়ে আসলেন।
8
টিভৎ ও কূন নামে হদরেষরের দুটো শহর থেকে দায়ূদ প্রচুর পরিমাণে পিতলও নিয়ে আসলেন। এই পিতল দিয়ে শলোমন সেই বিরাট পাত্র, থাম ও পিতলের অন্যান্য জিনিস তৈরী করেছিলেন।
9
হমাতের রাজা তয়ূ শুনতে পেলেন যে, দায়ূদ সোবার রাজা হদরেষরের গোটা সৈন্যদলকে হারিয়ে দিয়েছেন।
10
দায়ূদ হদরেষরের সঙ্গে যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন বলে তাঁকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাবার জন্য তয়ি তাঁর ছেলে হদোরামকে রাজা দায়ূদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। এই হদরেষরের সঙ্গে তয়ূর অনেকবার যুদ্ধ হয়েছিল। হদোরাম দায়ূদের জন্য সঙ্গে করে সোনা, রূপা ও পিতলের নানা রকম জিনিস নিয়ে এসেছিলেন।
11
এর আগে রাজা দায়ূদ ইদোমীয়, মোয়াবীয়, অম্মোনীয়, পলেষ্টীয় এবং অমালেকীয়দের কাছ থেকে সোনা ও রূপা নিয়ে এসে যেমন সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে আলাদা করে রেখেছিলেন তেমনি এগুলো নিয়েও তিনি তাই করলেন।
12
সরূয়ার ছেলে অবীশয় লবণ উপত্যকায় আঠারো হাজার ইদোমীয়কে মেরে ফেললেন।
13
তিনি ইদোমের কয়েক জায়গায় সৈন্যদল রাখলেন আর তাতে সমস্ত ইদোমীয়েরা দায়ূদের অধীন হল। দায়ূদ যে কোনো জায়গায় যেতেন সদাপ্রভু সেখানেই তাঁকে জয়ী করতেন।
14
দায়ূদ সমস্ত ইস্রায়েল দেশের উপর রাজত্ব করতে লাগলেন। তাঁর লোকদের তিনি ন্যায়ভাবে বিচার ও শাসন করতেন।
15
সরূয়ার ছেলে যোয়াব ছিলেন তাঁর প্রধান সেনাপতি আর অহীলূদের ছেলে যিহোশাফট তাঁর রাজত্বের সব ইতিহাস লিখে রাখতেন।
16
অহীটূবের ছেলে সাদোক ও অবিয়াথরের ছেলে অবীমেলক ছিলেন যাজক আর শব্শ ছিলেন রাজার লেখক।
17
যিহোয়াদার ছেলে বনায় করেথীয় ও পলেথীয়দের প্রধান, আর দায়ূদের ছেলেরা রাজার প্রধান প্রধান পদে নিযুক্ত ছিলেন।
19
1
পরে অম্মোনীয় রাজা নাহশ মারা গেলে পর তাঁর ছেলে হানূন তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
2
দায়ূদ বললেন, “হানূনের বাবা নাহশ আমার প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন বলে আমিও হানূনের প্রতি বিশ্বস্ত থাকব।” সেইজন্য তাঁর বাবার মৃত্যুতে তাঁকে সান্ত্বনা দেবার জন্য তিনি কয়েকজন লোক পাঠিয়ে দিলেন। দায়ূদের লোকেরা হানূনকে সান্ত্বনা দেবার জন্য অম্মোনীয়দের দেশে গেল।
3
কিন্তু অম্মোনীয় নেতারা হানূনকে বললেন, “আপনি কি মনে করেন যে, দায়ূদ আপনার বাবার প্রতি সম্মান দেখাবার জন্য আপনাকে সান্ত্বনা দিতে লোক পাঠিয়েছে? সে তাদের আপনার কাছে পাঠিয়েছে যাতে তারা গুপ্তচর হিসাবে দেশের খোঁজখবর নিয়ে পরে সেটা ধ্বংস করে দিতে পারে।”
4
হানূন তখন দায়ূদের লোকদের ধরে তাদের দাড়ি কামিয়ে দিলেন এবং লম্বা জামার অর্ধেকটা, অর্থাৎ কোমর পর্যন্ত কেটে দিয়ে তাদের বিদায় করে দিলেন।
5
কেউ এসে দায়ূদকে সেই লোকদের প্রতি কি করা হয়েছে তা জানালে পর তাঁর পাঠানো সেই লোকদের সঙ্গে দেখা করবার জন্য তিনি কয়েকজন লোক পাঠিয়ে দিলেন, কারণ সেই লোকেরা খুব লজ্জিত ছিল। রাজা তাদের বলে পাঠালেন, “তোমাদের দাড়ি বেড়ে না ওঠা পর্যন্ত তোমরা যিরীহোতেই থাক; তারপর তোমরা ফিরে এসো।”
6
অম্মোনীয়েরা যখন বুঝতে পারল যে, তারা দায়ূদের কাছে নিজেদের ঘৃণার পাত্র করে তুলেছে, তখন হানূন ও অম্মোনীয়েরা অরাম নহরয়িম, অরাম মাখা ও সোবা থেকে রথ ও অশ্বারোহীদের ভাড়া করে আনবার জন্য ঊনচল্লিশ হাজার কেজি রূপা পাঠিয়ে দিল।
7
তারা বত্রিশ হাজার রথ এবং সৈন্যদল সমেত মাখার রাজাকে ভাড়া করল। তিনি ও তাঁর সৈন্যেরা এসে মেদবার কাছে ছাউনি ফেললেন আর ওদিকে অম্মোনীয়েরা নিজের নিজের শহর থেকে একত্র হয়ে যুদ্ধের জন্য বের হল।
8
এই সব শুনে দায়ূদ যোয়াবকে এবং তাঁর সমস্ত শক্তিশালী সৈন্যদলকে পাঠিয়ে দিলেন।
9
তখন অম্মোনীয়েরা বের হয়ে তাদের শহরের ফটকে ঢুকবার পথে যুদ্ধের জন্য সৈন্য সাজাল। এদিকে যে রাজারা এসেছিলেন তাঁরা খোলা মাঠে থাকলেন।
10
যোয়াব দেখলেন তাঁর সামনে এবং পিছনে অরামীয় সৈন্যদের সাজানো হয়েছে। সেইজন্য তিনি তাঁর সৈন্যদের মধ্য থেকে কতগুলো বাছাই করা সৈন্য নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে সাজালেন।
11
বাকী সৈন্যদের তিনি তাঁর ভাই অবীশয়ের অধীনে রাখলেন; তাতে তারা অম্মোনীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য নিজেদের সাজাল।
12
যোয়াব তাঁর ভাইকে বললেন, “যদি অরামীয়েরা আমার চেয়ে শক্তিশালী হয় তবে তুমি আমাকে সাহায্য করতে আসবে, আর যদি অম্মোনীয়েরা তোমার চেয়ে শক্তিশালী হয় তবে আমি তোমাকে সাহায্য করতে যাব।
13
সাহস কর; আমাদের লোকদের জন্য এবং আমাদের ঈশ্বরের শহরগুলোর জন্য এস, আমরা সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করি। সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তিনি তাই করবেন।”
14
এই বলে যোয়াব তাঁর সৈন্যদল নিয়ে অরামীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করবার জন্য এগিয়ে গেলে পর অরামীয়েরা তাঁর সামনে থেকে পালিয়ে গেল।
15
অরামীয়দের পালিয়ে যেতে দেখে অম্মোনীয়েরাও যোয়াবের ভাই অবীশয়ের সামনে থেকে পালিয়ে গিয়ে শহরের ভিতরে ঢুকল। কাজেই যোয়াব যিরূশালেমে ফিরে গেলেন।
16
অরামীয়েরা যখন দেখল যে, তারা ইস্রায়েলীয়দের কাছে সম্পূর্ণভাবে হেরে গেছে তখন তারা লোক পাঠিয়ে ইউফ্রেটিস নদীর ওপারে বাস করা অরামীয়দের নিয়ে আসল। হদরেষরের সৈন্যদলের সেনাপতি শোবক তাদের পরিচালনা করে নিয়ে আসলেন।
17
দায়ূদকে সেই কথা জানালে পর তিনি সমস্ত ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের জড়ো করলেন এবং যর্দন নদী পার হয়ে তাদের বিরুদ্ধে এগিয়ে গেলেন এবং তাদের সামনের দিকে যুদ্ধের জন্য সৈন্য সাজালেন। তখন অরামীয়েরা দায়ূদের সঙ্গে যুদ্ধ করল।
18
কিন্তু ইস্রায়েলীয়দের সামনে থেকে তারা পালিয়ে গেল। তখন দায়ূদ তাদের সাত হাজার রথচালক ও চল্লিশ হাজার পদাতিক সৈন্য মেরে ফেললেন। তিনি তাদের সেনাপতি শোবককেও মেরে ফেললেন।
19
হদরেষরের অধীন রাজারা যখন দেখলেন যে, তাঁরা ইস্রায়েলীয়দের কাছে হেরে গেছেন তখন দায়ূদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করে তাঁরা তাঁর অধীন হলেন। কাজেই অম্মোনীয়দের সাহায্য করতে অরামীয়েরা আর রাজী হল না।
20
1
বসন্তকালে যখন রাজারা সাধারণত: যুদ্ধ করতে বের হন তখন যোয়াব সৈন্যদল নিয়ে বের হলেন। তিনি অম্মোনীয়দের দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়ে রব্বাতে গিয়ে সেটা ঘেরাও করলেন। দায়ূদ কিন্তু যিরূশালেমেই রয়ে গেলেন। যোয়াব রব্বা আক্রমণ করে সেটা ধ্বংস করে দিলেন।
2
দায়ূদ সেখানকার রাজার মাথা থেকে মুকুটটা খুলে নিলেন। সেটা প্রায় চৌত্রিশ কেজি সোনা দিয়ে তৈরী ছিল, আর তাতে দামী পাথর বসানো ছিল। মুকুটটা দায়ূদের মাথায় পরিয়ে দেওয়া হল। দায়ূদ সেই শহর থেকে অনেক লুটের মাল নিয়ে আসলেন।
3
তিনি শহরের লোকদের বের করে আনলেন এবং করাত, লোহার মই ও কুড়ুল দিয়ে তাদের কেটে ফেললেন। অম্মোনীয়দের সমস্ত শহরেও তিনি তাই করলেন। এর পর দায়ূদ তাঁর সমস্ত সৈন্যদল নিয়ে যিরূশালেমে ফিরে গেলেন।
4
পরে গেষরে পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ আরম্ভ হল। সেই সময় হূশাতীয় সিব্বখয় রফায়ীয়দের বংশের সিপ্পয় নামে একজনকে মেরে ফেলল, আর এতে পলেষ্টীয়েরা হেরে গেল।
5
পলেষ্টীয়দের সঙ্গে আর একটা যুদ্ধে যায়ীরের ছেলে ইল্হানন গাতীয় গলিয়াতের ভাই লহমিকে মেরে ফেলল। তার বর্শাটা ছিল তাঁতীদের বীমের মত।
6
গাতে আর একটা যুদ্ধ হয়েছিল। সেই যুদ্ধে একজন লম্বা চওড়া লোক ছিল যার দুই হাতে ও দুই পায়ে ছয়টা করে মোট চব্বিশটা আঙ্গুল ছিল। সেও ছিল একজন রফায়ীয়ের বংশধর।
7
সে যখন ইস্রায়েল জাতিকে টিট্কারি দিল তখন দায়ূদের ভাই শিমিয়ের ছেলে যোনাথন তাকে মেরে ফেলল।
8
গাতের এই লোকেরা ছিল রফার বংশের লোক। দায়ূদ ও তাঁর লোকদের হাতে এরা মারা পড়েছিল।
21
লোকগণনার জন্য ঈশ্বরের কোপ।
1
শয়তান এবার ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লাগল। ইস্রায়েল জাতির লোক গণনা করবার জন্য সে দায়ূদকে উত্তেজিত করেছিল।
2
দায়ূদ তখন যোয়াব ও সৈন্যদলের সেনাপতিদের বললেন, “বের্শেবা থেকে দান পর্যন্ত ইস্রায়েলীয়দের গণনা কর। তারপর ফিরে এসে আমাকে হিসাব দিয়ো যাতে এদের সংখ্যা কত তা আমি জানতে পারি।”
3
কিন্তু যোয়াব উত্তরে বললেন, “সদাপ্রভু যেন তাঁর নিজের লোকদের সংখ্যা একশো গুণ বাড়িয়ে দেন। আমার প্রভু মহারাজ, এরা সবাই কি আপনার দাস নয়? তবে কেন আমার প্রভু এটা করতে চাইছেন? কেন আপনার জন্য গোটা ইস্রায়েল জাতি দোষী হবে?”
4
কিন্তু যোয়াবের কাছে রাজার আদেশ বহাল থাকল; কাজেই যোয়াব গিয়ে গোটা ইস্রায়েল দেশটা ঘুরে যিরূশালেমে ফিরে আসলেন।
5
যারা তলোয়ার চালাতে পারে তাদের সংখ্যা তিনি দায়ূদকে জানালেন তা হল গোটা ইস্রায়েলে এগারো লক্ষ এবং যিহূদায় চার লক্ষ সত্তর হাজার।
6
যোয়াব কিন্তু সেই গণনার মধ্যে লেবি ও বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোকদের ধরেননি, কারণ রাজার এই আদেশ তাঁর কাছে খারাপ মনে হয়েছিল।
7
এই আদেশ ঈশ্বরের চোখেও ছিল মন্দ; তাই তিনি ইস্রায়েল জাতিকে শাস্তি দিলেন।
8
তখন দায়ূদ ঈশ্বরকে বললেন, “আমি এই কাজ করে ভীষণ পাপ করেছি। এখন আমি তোমার কাছে মিনতি করি, তুমি তোমার দাসের এই অন্যায় ক্ষমা কর। আমি খুবই বোকামির কাজ করেছি।”
9
সদাপ্রভু তখন দায়ূদের ভাববাদী গাদকে বললেন,
10
“তুমি গিয়ে দায়ূদকে এই কথা বল, ‘আমি সদাপ্রভু তোমাকে তিনটি শাস্তির মধ্য থেকে একটা বেছে নিতে বলছি। তুমি তার মধ্য থেকে যেটা বেছে নেবে আমি তোমার প্রতি তাই করব।”
11
তখন গাদ দায়ূদের কাছে গিয়ে বললেন, “সদাপ্রভু আপনাকে এগুলোর মধ্য থেকে একটা বেছে নিতে বলছেন
12
তিন বছর ধরে দুর্ভিক্ষ, কিম্বা আপনার শত্রুদের কাছে হেরে গিয়ে তাদের সামনে থেকে তিন মাস ধরে পালিয়ে বেড়ানো, কিম্বা তিন দিন পর্যন্ত সদাপ্রভুর তলোয়ার, অর্থাৎ দেশের মধ্যে মহামারী। সেই তিন দিন সদাপ্রভুর দূত ইস্রায়েলের সব জায়গায় ধ্বংসের কাজ করে বেড়াবেন। এখন আপনি বলুন, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকে আমি কি উত্তর দেব?”
13
দায়ূদ গাদকে বললেন, “আমি খুব বিপদে পড়েছি। আমি যেন মানুষের হাতে না পড়ি, তার চেয়ে বরং সদাপ্রভুর হাতেই পড়ি, কারণ তাঁর করুণা অসীম।”
14
তখন সদাপ্রভু ইস্রায়েলের উপর একটা মহামারী পাঠিয়ে দিলেন আর তাতে ইস্রায়েলের সত্তর হাজার লোক মারা পড়ল।
15
যিরূশালেম শহর ধ্বংস করবার জন্য ঈশ্বর একজন দূতকে পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু সেই দূত যখন সেই কাজ করতে যাচ্ছিলেন তখন সদাপ্রভু সেই ভীষণ শাস্তি দেওয়া থেকে মন ফিরালেন। সেই ধ্বংসকারী স্বর্গদূতকে তিনি বললেন, “থাক্, যথেষ্ট হয়েছে, এবার তোমার হাত গুটাও।” সদাপ্রভুর দূত তখন যিবূষীয় অর্ণানের খামারের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
16
এর মধ্যে দায়ূদ উপর দিকে তাকিয়ে দেখলেন যে, সদাপ্রভুর দূত পৃথিবী এবং আকাশের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন আর তাঁর হাতে রয়েছে যিরূশালেমের উপর মেলে ধরা খোলা তলোয়ার। এ দেখে দায়ূদ ও বৃদ্ধ নেতারা চট্ পরা অবস্থায় মাটির উপর উপুড় হয়ে পড়লেন।
17
তখন দায়ূদ ঈশ্বরকে বললেন, “লোকদের গণনা করবার হুকুম কি আমিই দিই নি? পাপ আমিই করেছি, অন্যায়ও করেছি আমি। এরা তো ভেড়ার মত, এরা কি করেছে? হে সদাপ্রভু, আমার ঈশ্বর, আমার ও আমার পরিবারের উপর তুমি শাস্তি দাও, কিন্তু এই মহামারী যেন আর তোমার লোকদের উপর না থাকে।”
18
তখন সদাপ্রভুর দূত গাদকে আদেশ দিলেন যেন তিনি দায়ূদকে যিবূষীয় অর্ণানের খামারে গিয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে একটা বেদী তৈরী করতে বলেন।
19
সদাপ্রভুর নাম করে গাদ তাঁকে যে কথা বলেছিলেন সেই কথার বাধ্য হয়ে দায়ূদ সেখানে গেলেন।
20
অর্ণান গম ঝাড়তে ঝাড়তে ঘুরে সেই স্বর্গদূতকে দেখতে পেল, আর তার সঙ্গে তার যে চারটি ছেলে ছিল তারা গিয়ে লুকাল।
21
দায়ূদ এগিয়ে গেলেন আর তাঁকে দেখে অর্ণান খামার ছেড়ে তাঁর সামনে গিয়ে মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে তাঁকে প্রণাম করল।
22
দায়ূদ তাকে বললেন, “তোমার ঐ খামার বাড়ীর জায়গাটা আমাকে দাও। আমি সেখানে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে একটা বেদী তৈরী করব যাতে লোকদের মধ্যে এই মহামারী থেমে যায়। পুরো দাম নিয়েই ওটা আমার কাছে বিক্রি কর।”
23
অর্ণান দায়ূদকে বলল, “আপনি ওটা নিন। আমার প্রভু মহারাজের যা ভাল মনে হয় তাই করুন। দেখুন, হোমবলির জন্য আমি আমার ষাঁড়গুলো দিচ্ছি, জ্বালানি কাঠের জন্য দিচ্ছি শস্য মাড়াইয়ের কাঠের যন্ত্র আর শস্য উৎসর্গের জন্য গম। আমি এই সবই আপনাকে দিচ্ছি।”
24
কিন্তু উত্তরে রাজা দায়ূদ অর্ণানকে বললেন, “না, তা হবে না। আমি এর পুরো দাম দিয়েই কিনে নেব। যা তোমার তা আমি সদাপ্রভুর জন্য নেব না, কিম্বা বিনামূল্যে পাওয়া এমন কোনো জিনিস দিয়ে হোমবলি উৎসর্গও করব না।”
25
এই বলে সেই জমির জন্য দায়ূদ অর্ণানকে সাত কেজি আটশো গ্রাম সোনা দিলেন।
26
দায়ূদ সেখানে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে একটা বেদী তৈরী করলেন এবং হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করলেন। তিনি সদাপ্রভুর কাছে মিনতি করলেন আর সদাপ্রভু হোমবলির বেদীর উপর স্বর্গ থেকে আগুন পাঠিয়ে উত্তর দিলেন।
27
এর পর সদাপ্রভু ঐ স্বর্গদূতকে আদেশ দিলেন আর তিনি তাঁর তলোয়ার খাপে ঢুকিয়ে রাখলেন।
28
সেই সময় দায়ূদ যখন দেখলেন যে, যিবূষীয় অর্ণানের খামারে সদাপ্রভু তাঁকে উত্তর দিলেন তখন তিনি সেখানে আরও উৎসর্গের অনুষ্ঠান করলেন।
29
মরু এলাকায় মোশি সদাপ্রভুর জন্য যে আবাস তাঁবু তৈরী করেছিলেন সেটা এবং হোমবলির বেদীটা সেই সময় গিবিয়োনের উপাসনার উঁচু জায়গায় ছিল।
30
কিন্তু সদাপ্রভুর দূতের তলোয়ারের ভয়ে দায়ূদ ঈশ্বরের ইচ্ছা জানবার জন্য সেই বেদীর সামনে যেতে পারলেন না।
22
মন্দির তৈরীর জন্য দায়ূদের আয়োজন।
1
এর পর দায়ূদ বললেন, “ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘর এবং ইস্রায়েলের হোমবলির বেদীর স্থান এখানেই হবে।”
2
বিভিন্ন জাতির যে সব লোকেরা ইস্রায়েল দেশে বাস করত দায়ূদ আদেশ দিলেন যেন তাদের জড়ো করা হয়। তাদের মধ্য থেকে তিনি পাথর কাটবার লোকদের বেছে নিলেন যাতে ঈশ্বরের ঘর তৈরীর জন্য তারা পাথর কেটে ছেঁটে প্রস্তুত করতে পারে।
3
ফটকগুলোর দরজার পেরেক ও কব্জার জন্য তিনি প্রচুর পরিমাণে লোহা দিলেন, আর এত পিতল দিলেন যে, তা ওজন করা যায় না।
4
এছাড়া তিনি অসংখ্য এরস কাঠও দিলেন, কারণ সীদোনীয় ও সোরীয়েরা দায়ূদকে প্রচুর এরস কাঠ এনে দিয়েছিল।
5
দায়ূদ বললেন, “আমার ছেলে শলোমনের বয়স কম এবং তার অভিজ্ঞতাও কম, কিন্তু সদাপ্রভুর জন্য যে ঘর তৈরী করতে হবে তা যেন সমস্ত জাতির চোখে খুব বিখ্যাত এবং জাঁকজমকে ও গৌরবে পূর্ণ হয়। কাজেই তার জন্য আমি সব কিছু প্রস্তুত করে রাখব।” এই বলে দায়ূদ তাঁর মৃত্যুর আগে অনেক কিছুর আয়োজন করে রাখলেন।
6
তারপর তিনি তাঁর ছেলে শলোমনকে ডেকে তাঁর উপর ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য একটা ঘর তৈরীর ভার দিলেন।
7
দায়ূদ শলোমনকে বললেন, “বাবা, আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য একটা ঘর তৈরীর ইচ্ছা আমার অন্তরে ছিল।
8
কিন্তু সদাপ্রভুর এই কথা আমাকে জানানো হল, ‘তুমি অনেক রক্তপাত করেছ এবং অনেক যুদ্ধও করেছ। তুমি আমার নামে ঘর তৈরী করবে না, কারণ আমার চোখের সামনে তুমি পৃথিবীতে অনেক রক্তপাত করেছ।
9
কিন্তু তোমার একটি ছেলে হবে যে শান্তি ভালবাসবে। তার চারপাশের শত্রুদের হাত থেকে আমি তাকে শান্তিতে রাখব। তার নাম হবে শলোমন (যার মানে শান্তি), কারণ আমি তার রাজত্বের সময়ে ইস্রায়েলকে শান্তিতে ও নিরাপদে রাখব।
10
সেই আমার জন্য একটা ঘর তৈরী করবে। সে হবে আমার ছেলে আর আমি হব তার বাবা। ইস্রায়েলের উপরে তার রাজত্ব আমি চিরকাল স্থায়ী করব।’
11
এখন বাবা আমার, সদাপ্রভু তোমার সঙ্গে থাকুন; তুমি সফলতা লাভ কর আর সদাপ্রভুর কথামত তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘর তৈরী কর।
12
সদাপ্রভু তোমার উপরে যখন ইস্রায়েলের শাসনভার দেবেন তখন যেন তিনি তোমাকে বুদ্ধি বিবেচনা ও বুঝবার শক্তি দেন যাতে তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আইন কানুন মেনে চলতে পার।
13
মোশির মধ্য দিয়ে সদাপ্রভু ইস্রায়েলকে যে নিয়ম ও নির্দেশ দিয়েছেন তা যদি তুমি যত্নের সঙ্গে পালন কর তাহলেই তুমি সফলতা লাভ করতে পারবে। তুমি শক্তিশালী হও আর মনে সাহস রাখ। ভয় কোরো না কিম্বা নিরাশ হোয়ো না।
14
আমি অনেক কষ্ট করে সদাপ্রভুর ঘরের জন্য তিন হাজার ন’শো টন সোনা ও ঊনচল্লিশ হাজার টন রূপা রেখেছি। এছাড়া এত বেশী পিতল ও লোহা রেখেছি আর কাঠ এবং পাথরও ঠিক করে রেখেছি। অবশ্য এর সঙ্গে তুমিও কিছু দিতে পারবে।
15
তোমার অনেক কাজের লোক আছে; তারা হল পাথর কাটবার মিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি ও ছুতার মিস্ত্রি।
16
এছাড়া রয়েছে অন্য সব রকম কাজ করবার ওস্তাদ লোক যারা সোনা, রূপা, পিতল ও লোহার কাজ করতে পারে। এই সব কারিগরদের সংখ্যা অনেক। এখন তুমি কাজ শুরু করে দাও আর সদাপ্রভু তোমার সঙ্গে থাকুন।”
17
দায়ূদ তারপর তাঁর ছেলে শলোমনকে সাহায্য করবার জন্য ইস্রায়েলের সমস্ত নেতাদের হুকুম দিয়ে বললেন,
18
“আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু কি আপনাদের সঙ্গে নেই? তিনি কি সব দিকেই আপনাদের শান্তি দেন নি? তিনি তো এই দেশের লোকদের আমার হাতে তুলে দিয়েছেন আর দেশটা সদাপ্রভু ও তাঁর লোকদের অধীন হয়েছে।
19
এখন আপনারা আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ইচ্ছা জানবার জন্য আপনাদের সমস্ত মন প্রাণ স্থির করুন এবং উঠ, সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে তাঁর পবিত্র ঘরটি তৈরী কর, যাতে তার মধ্যে সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিন্দুক ও ঈশ্বরের পবিত্র জিনিসগুলো এনে রাখা যায়।”
23
লেবীয়দের নির্দিষ্ট কাজ।
1
দায়ূদ যখন খুব বেশী বুড়ো হয়ে গেলেন তখন তাঁর ছেলে শলোমনকে তিনি ইস্রায়েলের উপরে রাজা করলেন।
2
দায়ূদ ইস্রায়েলের সমস্ত নেতা, যাজক এবং লেবীয়দের জড়ো করলেন।
3
যে সব লেবীয় পুরুষেরা ত্রিশ কিম্বা তার বেশী বয়সের ছিল তাদের গণনা করলে দেখা গেল তাদের সংখ্যা আটত্রিশ হাজার।
4
এদের মধ্য থেকে চব্বিশ হাজার জন সদাপ্রভুর ঘরের কাজের দেখাশোনা করবার জন্য নিযুক্ত হল আর ছয় হাজার জন হল কর্মকর্তা ও বিচারক এবং চার হাজার জন হল রক্ষী।
5
দায়ূদ যে সব বাজনা তৈরী করিয়েছিলেন তা ব্যবহার করে সদাপ্রভুর প্রশংসা করবার জন্য বাকী চার হাজার লেবীয় নিযুক্ত হল।
6
লেবির ছেলে গের্শোন, কহাৎ ও মরারির বংশ অনুসারে দায়ূদ লেবীয়দের ভাগ করে দিলেন।
7
গের্শোনের বংশের মধ্যে ছিলেন লাদন ও শিমিয়ি।
8
লাদনের তিনজন ছেলের মধ্যে প্রধান ছিলেন যিহীয়েল, তারপর সেথম ও যোয়েল।
9
শিমিয়ির তিনজন ছেলে হল শলোমৎ, হসীয়েল ও হারণ। এঁরা ছিলেন লাদনের বিভিন্ন বংশের নেতা।
10
শিমিয়ির চারজন ছেলে হল যহৎ, সীন, যিয়ূশ ও বরীয়।
11
এঁদের মধ্যে প্রথম ছিলেন যহৎ আর দ্বিতীয় ছিলেন সীন; কিন্তু যিয়ূশ ও বরীয়ের ছেলের সংখ্যা কম ছিল বলে তাঁদের সবাইকে একটা বংশের মধ্যে ধরা হল।
12
কহাতের চারজন ছেলে হল অম্রাম, যিষ্হর, হিব্রোণ ও উষীয়েল।
13
অম্রামের ছেলেরা হল হারোণ ও মোশি। হারোণ ও তাঁর বংশধরদের চিরকালের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে আলাদা করা হল যেন তাঁরা মহাপবিত্র জিনিসগুলোর ভার নিতে পারেন, সদাপ্রভুর সামনে ধূপ জ্বালাতে পারেন, তাঁর সামনে সেবা কাজ করতে পারেন এবং তাঁর নামে আশীর্বাদ উচ্চারণ করতে পারেন।
14
কিন্তু যেমন ঈশ্বরের লোক মোশি তাঁর ছেলেদের লেবীয়দের মধ্যে ধরা হত।
15
মোশির ছেলেরা হল গের্শোম ও ইলীয়েষর।
16
গের্শোমের বংশধরদের মধ্যে শবূয়েল ছিলেন নেতা।
17
ইলীয়েষরের বংশধরদের মধ্যে রহবিয় ছিলেন নেতা। ইলীয়েষরের আর কোনো ছেলে ছিল না, কিন্তু রহবিয়ের ছেলের সংখ্যা ছিল অনেক।
18
যিষ্হরের বংশধরদের মধ্যে শলোমীৎ ছিলেন নেতা।
19
হিব্রোণের ছেলেদের মধ্যে প্রথম ছিলেন যিরিয়, দ্বিতীয় অমরিয়, তৃতীয় যহসীয়েল ও চতুর্থ যিকমিয়াম।
20
উষীয়েলের ছেলেদের মধ্যে মীখা ছিলেন প্রথম ও যিশিয় ছিলেন দ্বিতীয়।
21
মরারির ছেলেরা হল মহলি ও মূশি। মহলির ছেলেরা হল ইলিয়াসর ও কীশ।
22
ইলিয়াসর কোনো ছেলে না রেখেই মারা গেলেন, তাঁর কেবল মেয়েই ছিল। কীশের ছেলেরা, আর তাদের আত্মীয় কীশের ছেলেরা তাদেরকে বিয়ে করল।
23
মূশির তিনজন ছেলে হল মহলি, এদর ও যিরেমোৎ।
24
এঁরাই ছিলেন বংশ অনুসারে লেবি গোষ্ঠীর বিভিন্ন বংশের নেতা। এঁদের বংশের লোকদের মধ্যে যাদের বয়স ছিল কুড়ি কিম্বা তার চেয়েও বেশী তাদের গণনা করে নাম লেখা হয়েছিল, আর তারাই ছিল সদাপ্রভুর ঘরের সেবাকারী।
25
দায়ূদ বলেছিলেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর লোকদের শান্তি দিয়েছেন এবং তিনি চিরকালের জন্য যিরূশালেমে বাস করবেন।
26
কাজেই সেবা কাজে ব্যবহার করবার জন্য আবাস তাঁবু কিম্বা অন্য কোনো জিনিস লেবীয়দের আর বহন করে নিয়ে যেতে হবে না।”
27
দায়ূদের শেষ নির্দেশ অনুসারে কুড়ি বছর থেকে শুরু করে তার বেশী বয়সের লেবীয়দের গণনা করা হয়েছিল।
28
এই লেবীয়দের কাজ ছিল সদাপ্রভুর ঘরের সেবা কাজে হারোণের বংশধরদের সাহায্য করা। এর মধ্যে ছিল উপাসনা ঘরের উঠান ও পাশের কামরাগুলোর দেখাশোনা করা, সমস্ত পবিত্র জিনিসগুলো শুচি করে নেওয়া এবং ঈশ্বরের ঘরের অন্যান্য কাজ করা।
29
তাদের উপরে এই সব জিনিসের ভার ছিল দর্শন রুটি, শস্য উৎসর্গের ময়দা, খামিহীন রুটি, সেঁকা রুটি এবং তেল মেশানো ময়দা। এছাড়া তাদের উপর ভার ছিল সব কিছুর ওজন ও পরিমাণ দেখা,
30
প্রত্যেক দিন সকালে এবং বিকালে দাঁড়িয়ে সদাপ্রভুর ধন্যবাদ ও প্রশংসা করা এবং বিশ্রামবারে, অমাবস্যার উৎসবে ও অন্যান্য নির্দিষ্ট পর্বে যখন সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হোমবলির অনুষ্ঠান করা হয় সেই সময়ও সদাপ্রভুর ধন্যবাদ ও প্রশংসা করা।
31
সদাপ্রভুর সামনে নিয়মিত ভাবে, তাঁর নির্দেশ অনুসারে এবং নির্দিষ্ট সংখ্যায় তাদের সেবা কাজ করতে হত।
32
এইভাবে লেবীয়েরা মিলন তাঁবুর ও পবিত্র স্থানের দেখাশোনা করত এবং সদাপ্রভুর ঘরের সেবা কাজের জন্য তাদের ভাই হারোণের বংশধরদের সাহায্য করে।
24
1
হারোণের বংশের লোকদের বিভিন্ন দলে ভাগ করা হয়েছিল। হারোণের ছেলেরা হল নাদব, অবীহূ, ইলিয়াসর ও ঈথামর।
2
হারোণ মারা যাবার আগেই নাদব ও অবীহূ কোনো ছেলে না রেখেই মারা গিয়েছিলেন; কাজেই ইলিয়াসর ও ঈথামর যাজকের কাজ করতেন।
3
সাদোক নামে ইলিয়াসরের একজন বংশধর এবং অহীমেলক নামে ঈথামরের একজন বংশধরের সাহায্যে দায়ূদ যাজকদের কাজ অনুসারে তাঁদের বিভিন্ন দলে ভাগ করে দিলেন।
4
এতে ঈথামরের বংশের লোকদের চেয়ে ইলিয়াসরের বংশের লোকদের মধ্যে অনেক বেশী নেতা পাওয়া গেল। সেইজন্য ইলিয়াসরের বংশের ষোলজন নেতার জন্য তাঁদের ষোল দলে এবং ইথামরের বংশের আটজন নেতার জন্য তাঁদের আট দলে ভাগ করা হল।
5
ইলিয়াসর ও ঈথামর, এই দুই বংশের নেতারা উপাসনা ঘরের ও ঈশ্বরের কর্মচারী ছিলেন বলে কারো পক্ষ না টেনে গুলিবাঁট করে যাজকদের কাজ ভাগ করা হল।
6
রাজা ও তাঁর উঁচু পদের কর্মচারীদের সামনে এবং সাদোক যাজক, অবিয়াথরের ছেলে অহীমেলক, যাজক বংশের নেতাদের ও লেবীয়দের সামনে নথনেলের ছেলে শময়িয় নামে একজন লেবীয় লেখক সেই নেতাদের নাম তালিকায় লিখলেন। পালা পালা করে ইলিয়াসরের বিভিন্ন বংশের মধ্য থেকে একজন ও তারপর ঈথামরের বিভিন্ন বংশের মধ্য থেকে একজনের জন্য গুলিবাঁট করা হল।
7
তখন প্রথম বারে গুলি উঠল যিহোয়ারীবের নামে, দ্বিতীয় বারে যিদয়িয়ের,
8
তৃতীয় বারে হারীমের, চতুর্থ বারে সিয়োরীমের,
9
পঞ্চম বারে মল্কিয়ের, ষষ্ঠ বারে মিয়ামীনের,
10
সপ্তম বারে হক্কোষের, অষ্টম বারে অবিয়ের,
11
নবম বারে যেশূয়ের, দশম বারে শখনিয়ের,
12
এগারো বারে ইলীয়াশীবের, বারো বারে যাকীমের,
13
তেরো বারে হুপ্পের, চৌদ্দ বারে যেশবাবের,
14
পনেরো বারে বিল্গার, ষোল বারে ইম্মেরের,
15
সতেরো বারে হেষীরের, আঠারো বারে হপ্পিসেসের,
16
ঊনিশ বারে পথাহিয়ের, কুড়ি বারে যিহিষ্কেলের,
17
একুশ বারে যাখীনের, বাইশ বারে গামূলের,
18
তেইশ বারে দলায়ের ও চব্বিশ বারে মাসিয়ের নামে।
19
তাঁদের পূর্বপুরুষ হারোণকে দেওয়া ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে হারোণ তাঁদের জন্য যে নিয়ম ঠিক করে দিয়েছিলেন সেইমত সদাপ্রভুর ঘরে গিয়ে সেবা কাজ করবার জন্য এইভাবে তাঁদের পালা ঠিক করা হল।
20
লেবি গোষ্ঠীর বাকী বংশগুলোর কথা এই: অম্রামের বংশের শবূয়েল, শবূয়েলের বংশ নেতা যেহদিয়
21
রহবিয়ের কথা; রহবিয়ের বংশ নেতা যিশিয়।
22
যিষ্হরীয়দের বংশের বাবা শলোমোৎ ও শলোমোতের বংশ নেতা যহৎ।
23
হিব্রোণের বংশের মধ্যে প্রথম যিরিয়, দ্বিতীয় অমরিয়, তৃতীয় যহসীয়েল এবং চতুর্থ যিকমিয়াম ছিলেন বংশের বাবা।
24
ঊষীয়েলের ছেলে মীখা; মীখা ছেলেদের মধ্যে শামীর।
25
মীখার ভাই যিশিয়; যিশিয়ের ছেলেদের মধ্যে সখরিয়।
26
মরারির ছেলে মহলি, মূশি ও যাসিয়; যাসিয়ের বংশের বিনো
27
মরারির ছেলে যাসিয়ের ছেলে বিনো, শোহম, শক্কুর ও ইব্রি ছিলেন বংশের বাবা।
28
মহলির বংশের ইলিয়াসর ও কীশ; ইলিয়াসরের কোনো ছেলে ছিল না।
29
কীশের বংশ নেতা ছিলেন যিরহমেল।
30
মূশির বংশের মহলি, এদর ও যিরেমোৎ ছিলেন বংশের বাবা। বিভিন্ন বংশ অনুসারে এঁরা ছিলেন লেবীয়।
31
এঁরাও রাজা দায়ূদ, সাদোক, অহীমেলক এবং যাজক ও লেবীয়দের বংশ নেতাদের সামনে এঁদের ভাইদের, অর্থাৎ হারোণের বংশের লোকদের মত করে গুলিবাঁট করেছিলেন। বড় ভাই হোক বা ছোট ভাই হোক তাদের সকলের জন্য একইভাবে গুলিবাঁট করা হয়েছিল।
25
গায়ক ও বাদকদের জন্য নির্দিষ্ট কাজ
1
উপাসনা ঘরের সেবা কাজ করবার জন্য দায়ূদ এবং সৈন্যদলের সেনাপতিরা আসফ, হেমন ও যিদূথূনের ছেলেদের আলাদা করে নিলেন যাতে তাঁরা সুরবাহার, বীণা ও করতালের সঙ্গে গানের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের বাক্য প্রকাশ করতে পারেন। যাঁরা এই কাজ করতেন তাঁদের তালিকা এই:
2
আসফের ছেলে সক্কুর, যোষেফ, নথনিয় ও অসারেল। তাঁরা রাজার আদেশে আসফের পরিচালনায় গানের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের বাক্য প্রকাশ করতেন।
3
যিদূথূনের ছয়জন ছেলে গদলিয়, সরী, যিশায়াহ, শিমিয়ি, হশবিয় ও মত্তিথিয়। তাঁরা তাঁদের বাবা যিদূথূনের পরিচালনায় সুরবাহার বাজিয়ে সদাপ্রভুর প্রশংসা ও ধন্যবাদের মধ্য দিয়ে তাঁর বাক্য প্রকাশ করতেন।
4
হেমনের ছেলে বুক্কিয়, মত্তনিয়, উষীয়েল, শবূয়েল, যিরীমোৎ, হনানিয়, হনানি, ইলীয়াথা, গিদ্দল্তি, রোমাম্তী এষর, যশ্বকাশা, মল্লোথি, হোথীর ও মহসীয়োৎ।
5
এঁরা সবাই ছিলেন রাজার দর্শক হেমনের ছেলে। ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা অনুসারে হেমনকে শক্তিশালী করবার জন্য ঈশ্বর তাঁকে চৌদ্দটি ছেলে ও তিনটি মেয়ে দিয়েছিলেন।
6
ঈশ্বরের ঘরের সেবা কাজের জন্য এঁরা সবাই তাঁদের বাবা আসফ, যিদূথূন আর হেমনের পরিচালনার অধীন ছিলেন। তাঁরা রাজার আদেশে করতাল, বীণা ও সুরবাহার নিয়ে সদাপ্রভুর ঘরে গান বাজনা করতেন।
7
সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে তাঁদের বংশের গান বাজনায় শিক্ষিত ও দক্ষ লোকদের নিয়ে তাঁদের সংখ্যা ছিল দুশো অষ্টাশি জন।
8
ছেলে বুড়ো, শিক্ষক ছাত্র সকলের কাজের পালা গুলিবাঁট করে ঠিক করা হয়েছিল।
9
আসফের পক্ষে প্রথম বারের গুলিবাঁটে যোষেফের নাম উঠল। দ্বিতীয় বারের গুলিবাঁটে উঠল গদলিয়ের নাম; তিনি, তাঁর আত্মীয় স্বজন ও ছেলেরা ছিলেন বারোজন।
10
তৃতীয় বারের গুলিবাঁটে উঠল সক্কুরের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
11
চতুর্থ বারের গুলিবাঁটে উঠল যিষ্রির নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
12
পঞ্চম বারে গুলিবাঁটে উঠল নথনিয়ের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
13
ষষ্ঠ বারের গুলিবাঁটে উঠল বুক্কিয়ের নাম; তিনি, তার ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
14
সপ্তম বারের গুলিবাঁটে উঠল যিশারেলার নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
15
অষ্টম বারের গুলিবাঁটে উঠল যিশয়াহের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
16
নবম বারের গুলিবাঁটে উঠল মত্তনিয়ের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
17
দশম বারের গুলিবাঁটে উঠল শিমিয়ির নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
18
এগারো বারের গুলিবাঁটে উঠল অসরেলের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
19
বারো বারের গুলিবাঁটে উঠল হশবিয়ের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারো জন।
20
তেরো বারের গুলিবাঁটে উঠল শবূয়েলের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
21
চৌদ্দ বারের গুলিবাঁটে উঠল মত্তিথিয়ের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
22
পনেরো বারের গুলিবাঁটে উঠল যিরেমোতের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
23
ষোল বারের গুলিবাঁটে উঠল হনানিয়ের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
24
সতেরো বারের গুলিবাঁটে উঠল যশ্বকাশার নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
25
আঠারো বারের গুলিবাঁটে উঠল হনানির নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
26
ঊনিশ বারের গুলিবাঁটে উঠল মল্লোথির নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
27
কুড়ি বারের গুলিবাঁটে উঠল ইলীয়াথার নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
28
একুশ বারের গুলিবাঁটে উঠল হোথীর নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
29
বাইশ বারের গুলিবাঁটে উঠল গিদ্দল্তির নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
30
তেইশ বারের গুলিবাঁটে উঠল মহসীয়োতের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
31
চব্বিশ বারের গুলিবাঁটে উঠল রোমাম্তী এষরের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
26
দরজার রক্ষী প্রভৃতি কর্মচারীদের নির্দিষ্ট কাজ।
1
রক্ষীদের বিভিন্ন দলে ভাগ করা হয়েছিল। কোরহীয়দের মধ্য থেকে আসফের বংশের কোরির ছেলে মশেলিমিয় ছিলেন বংশের লোক।
2
মশেলিমিয়ের ছেলেরা হল, প্রথম সখরিয়, দ্বিতীয় যিদীয়েল, তৃতীয় সবদিয়, চতুর্থ যৎনীয়েল,
3
পঞ্চম এলম, ষষ্ঠ যিহোহানন, সপ্তম ইলিহৈনয়।
4
ওবেদ ইদোমের ছেলে ছিল। তাঁর ছেলেরা হল, প্রথম শময়িয়, দ্বিতীয় যিহোষাবদ, তৃতীয় যোয়াহ, চতুর্থ সাখর, পঞ্চম নথনেল,
5
ষষ্ঠ অম্মীয়েল, সপ্তম ইষাখর ও অষ্টম পিয়ূল্লতয়।
6
ওবেদ ইদোমের ছেলে শময়িয়েরও কয়েকজন ছেলে ছিল; তাঁরা প্রত্যেকে তাঁদের বংশের নেতা ছিলেন, কারণ তাঁরা ছিলেন বীর যোদ্ধা।
7
শময়িয়ের ছেলেরা হল অৎনি, রফায়েল, ওবেদ, ইল্সাবদ। শময়িয়ের বংশের ইলীহূ আর সমথিয়ও ছিলেন শক্তিশালী লোক।
8
এঁরা সবাই ছিলেন ওবেদ ইদোমের বংশের লোক। তাঁরা, তাঁদের ছেলেরা ও বংশের লোকেরা ছিলেন উপযুক্ত ও শক্তিশালী। ওবেদ ইদোমের বংশের লোকেরা ছিলেন মোট বাষট্টিজন।
9
মশেলিমিয়ের ছেলেরা ও তাঁর বংশের লোকেরা ছিলেন শক্তিশালী লোক। তাঁরা ছিলেন মোট আঠারোজন।
10
মরারি বংশের হোষার চারজন ছেলের মধ্যে প্রথম শিম্রি, দ্বিতীয় হিল্কিয়, তৃতীয় টবলিয়, চতুর্থ সখরিয়।
11
শিম্রি অবশ্য প্রথম ছেলে ছিলেন না, কিন্তু তাঁর বাবা তাঁকে নেতার স্থান দিয়েছিলেন। হোষার ছেলেরা ও তাঁর বংশের লোকেরা মোট ছিলেন তেরোজন।
12
ভিন্ন ভিন্ন দলে ভাগ করা এই সব রক্ষীরা তাঁদের নেতাদের অধীনে থেকে তাঁদের গোষ্ঠী ভাইদের মতই সদাপ্রভুর ঘরে সেবা কাজের ভার পেয়েছিলেন।
13
বংশ অনুসারে ছেলে বুড়ো সকলের জন্যই গুলিবাঁট করা হয়েছিল যাতে ঠিক করা যায় কোন্ দল কোন্ ফটকে পাহারা দেবে।
14
পূর্ব দিকের ফটকের জন্য গুলি উঠল শেলিমিয়ের নামে। তারপর তাঁর ছেলে সখরিয়ের জন্য গুলিবাঁট করা হলে তাঁর নামে উত্তর দিকের ফটকের জন্য গুলি উঠল। তিনি ছিলেন একজন জ্ঞানী পরামর্শদাতা।
15
দক্ষিণ দিকের ফটকের জন্য গুলি উঠল ওবেদ ইদোমের নামে। ভাণ্ডার ঘরের জন্য গুলি উঠল তাঁর ছেলেদের নামে।
16
পশ্চিম দিকের ফটকের জন্য গুলি উঠল শুপ্পীম ও হোষার নামে। এই ফটকটা ছিল উপর দিকের রাস্তার উপরকার শল্লেখৎ নামে ফটকের কাছে।
17
এই সব লেবীয়েরা পালা পালা করে কাজ করতেন পূর্ব দিকে প্রতিদিন ছয়জন, উত্তর দিকে চারজন আর দক্ষিণ দিকে চারজন পাহারাদারের কাজ করতেন এবং ভাণ্ডার ঘরে দুজন দুজন করে থাকতেন।
18
পশ্চিমের উঠানের জন্য রাস্তার দিকে চারজন এবং উঠানে দুজন থাকতেন।
19
এই ছিল কোরহ আর মরারির বংশের রক্ষীদের দলভাগ। ধনভাণ্ডারের দেখাশোনাকারী ও অন্যান্য কর্মচারী
20
ঈশ্বরের ঘরের ধনভাণ্ডার এবং ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে আলাদা করা জিনিসের ভাণ্ডারের দেখাশোনার ভার ছিল বাকী লেবীয়দের মধ্য থেকে অহিয়ের উপর।
21
গের্শোনীয় লাদনের ছেলে হল যিহীয়েলি। যিহীয়েলির ছেলে সেথম ও তাঁর ভাই
22
যোয়েলের উপর ছিল সদাপ্রভুর ঘরের ধনভাণ্ডারের দেখাশোনার ভার। এঁরা ছিলেন তাঁদের নিজের নিজের বংশের নেতা।
23
অম্রামীয়, যিষ্হরীয়, হিব্রোণীয় ও উষীয়েলীয়দেরও কাজের ভার দেওয়া হয়েছিল।
24
শবূয়েল নামে মোশির ছেলে গের্শোমের একজন বংশধর প্রধান ধনরক্ষক ছিলেন।
25
গের্শোমের ভাই ইলীয়ষেরের মধ্য দিয়ে শলোমোৎ ছিলেন শবূয়েলের বংশের লোক। ইলীয়ষেরের ছেলে রহবিয়, রহবিয়ের ছেলে যিশায়াহ, যিশায়াহের ছেলে যোরাম, যোরামের ছেলে সিখ্রি, সিখ্রির ছেলে শলোমোৎ।
26
রাজা দায়ূদ, ইস্রায়েলের বিভিন্ন বংশের নেতারা, হাজার ও শত সৈন্যের সেনাপতিরা এবং প্রধান সেনাপতিরা যে সব জিনিস ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে আলাদা করে রেখেছিলেন শলোমোৎ ও তাঁর বংশের লোকেরা সেই সব জিনিসের ভাণ্ডারের দেখাশোনাকারী ছিলেন।
27
যুদ্ধে লুঠ করা কতগুলো জিনিস তাঁরা সদাপ্রভুর ঘর মেরামতের জন্য তাঁর উদ্দেশ্যে আলাদা করে রেখেছিলেন।
28
এছাড়া দর্শক শমূয়েল, কীশের ছেলে শৌল, নেরের ছেলে অব্নের ও সরূয়ার ছেলে যোয়াব যে সব জিনিস ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে আলাদা করে রেখেছিলেন, মোট কথা, সমস্ত আলাদা করা জিনিসের দেখাশোনার ভার ছিল শলোমোৎ ও তাঁর বংশের লোকদের উপর।
29
যিষ্হরীয়দের মধ্য থেকে কননিয় ও তাঁর ছেলেরা উপাসনা ঘরের কাজে নয়, কিন্তু ইস্রায়েল দেশের উপরে কর্মকর্তা ও বিচারকের কাজে নিযুক্ত হলেন।
30
হিব্রোণীয়দের মধ্য থেকে হশবিয় ও তাঁর বংশের এক হাজার সাতশো শক্তিশালী লোক সদাপ্রভুর ও রাজার সমস্ত কাজ করবার জন্য যর্দন নদীর পশ্চিম দিকের ইস্রায়েলীয়দের উপরে নিযুক্ত হলেন।
31
হিব্রোণীয়দের মধ্যে যিরিয় ছিলেন নেতা। দায়ূদের রাজত্বের চল্লিশ বছরের সময় তাদের বংশ তালিকাগুলোর মধ্যে খোঁজ করা হল এবং গিলিয়দের যাসেরে হিব্রোণীয়দের মধ্যে অনেক বীর যোদ্ধা পাওয়া গেল।
32
যিরিয়ের বংশের দুই হাজার সাতশো জন লোক ছিলেন শক্তিশালী। তাঁরা ছিলেন নিজের নিজের পরিবারের কর্তা। রাজা দায়ূদ ঈশ্বরের ও রাজার সমস্ত কাজ করবার জন্য রূবেণীয়, গাদীয় ও মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোকদের উপরে এই হিব্রোণীয়দের নিযুক্ত করলেন।
27
সেনাপতি প্রভৃতি নেতাদের নাম।
1
এই হল ইস্রায়েলীয় বংশের নেতা, হাজার ও শত সৈন্যের সেনাপতি ও তাঁদের অধীন কর্মচারীদের তালিকা। এঁরা বিভিন্ন সৈন্যদলের সমস্ত বিষয়ে রাজাকে সাহায্য করতেন। বারোটি দলের প্রত্যেকটিতে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল। সারা বছর ধরে এক একটি দল এক এক মাস করে কাজ করত।
2
প্রথম মাসের জন্য প্রথম সৈন্যদলের ভার ছিল সব্দীয়েলের ছেলে যাশবিয়ামের উপর। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
3
তিনি ছিলেন পেরসের বংশধর। তিনি প্রথম মাসের জন্য সমস্ত সেনাপতিদের নেতা ছিলেন।
4
দ্বিতীয় মাসের জন্য সৈন্যদলের ভার ছিল অহোহীয় দোদাইয়ের উপর। তাঁর অধীনে দলনেতা ছিলেন মিক্লোৎ। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
5
তৃতীয় মাসের জন্য সেনাপতি ছিলেন যাজক যিহোয়াদার ছেলে বনায়। তিনি ছিলেন তৃতীয় দলের নেতা। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
6
ইনি সেই বনায় যিনি ত্রিশজন বীর যোদ্ধাদের দলের একজন ছিলেন এবং সেই দলের নেতা ছিলেন। তাঁর ছেলে অম্মীষাবাদ তাঁর দলে ছিলেন।
7
চতুর্থ মাসের জন্য চতুর্থ দলের সেনাপতি ছিলেন যোয়াবের ভাই অসাহেল। তাঁর মৃত্যুর পরে সেনাপতি হয়েছিলেন তাঁর ছেলে সবদিয়। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
8
পঞ্চম মাসের জন্য পঞ্চম দলের সেনাপতি ছিলেন যিষ্রাহীয় শমহূৎ। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
9
ষষ্ঠ মাসের জন্য ষষ্ঠ দলের সেনাপতি ছিলেন তকোয়ীয় ইক্কেশের ছেলে ঈরা। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
10
সপ্তম মাসের জন্য সপ্তম দলের সেনাপতি ছিলেন পলোনীয় হেলস; তিনি ছিলেন ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর একজন লোক। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
11
অষ্টম মাসের জন্য অষ্টম দলের সেনাপতি ছিলেন হূশাতীয় সিব্বখয়; তিনি ছিলেন সেরহের বংশের একজন লোক। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
12
নবম মাসের জন্য নবম দলের সেনাপতি ছিলেন অনাথোতীয় অবীয়েষর; তিনি ছিলেন বিন্যামীন গোষ্ঠীর একজন লোক। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
13
দশম মাসের জন্য দশম দলের সেনাপতি ছিলেন নটোফাতীয় মহরয়। তিনি ছিলেন সেরহের বংশের একজন লোক। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
14
একাদশ মাসের জন্য একাদশ দলের সেনাপতি ছিলেন পিরিয়াথোনীয় বনায়। তিনি ছিলেন ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর একজন লোক। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
15
দ্বাদশ মাসের জন্য দ্বাদশ দলের সেনাপতি ছিলেন নটোফাতীয় হিল্দয়। তিনি ছিলেন অৎনীয়েলের বংশের একজন লোক। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
16
ইস্রায়েলের গোষ্ঠীগুলোর প্রধান নেতাদের তালিকা এই: রূবেণীয়দের নেতা সিখ্রির ছেলে ইলীয়েষর, শিমিয়োনীয়দের নেতা মাখার ছেলে শফটিয়,
17
লেবি গোষ্ঠীর নেতা কমূয়েলের ছেলে হশবিয়, হারোণের বংশের নেতা সাদোক,
18
যিহূদা গোষ্ঠীর নেতা দায়ূদের ভাই ইলীহূ, ইষাখর গোষ্ঠীর নেতা মীখায়েলের ছেলে অম্রি,
19
সবূলূন গোষ্ঠীর নেতা ওবদিয়ের ছেলে যিশ্মায়য়, নপ্তালি গোষ্ঠীর নেতা অস্রীয়েলের ছেলে যিরেমোৎ,
20
ইফ্রয়িমের বংশের নেতা অসসিয়ের ছেলে হোশেয়, মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোকদের নেতা পদায়ের ছেলে যোয়েল,
21
গিলিয়দে বাসকারী মনঃশি গোষ্ঠীর বাকী অর্ধেক লোকদের নেতা সখরিয়ের ছেলে যিদ্দো, বিন্যামীন গোষ্ঠীর নেতা অব্নেরের ছেলে যাসীয়েল,
22
দান গোষ্ঠীর নেতা যিরোহমের ছেলে অসরেল। এঁরাই ছিলেন ইস্রায়েলের গোষ্ঠীগুলোর প্রধান নেতা।
23
দায়ূদ কুড়ি কিম্বা তার চেয়ে কম বয়সী লোকদের সংখ্যা গণনা করলেন না, কারণ সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের সংখ্যা আকাশের তারার মত অসংখ্য করবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন।
24
সরূয়ার ছেলে যোয়াব লোকগণনা করতে শুরু করেছিলেন, কিন্তু তা শেষ করেননি। লোকগণনার জন্য ইস্রায়েলের উপর সদাপ্রভুর ক্রোধ নেমে এসেছিল। সেইজন্য রাজা দায়ূদের ইতিহাস বইতে লোকদের কোনো সংখ্যা লেখা হয়নি।
25
রাজার ভাণ্ডারের দেখাশোনার ভার ছিল অদীয়েলের ছেলে অস্মাবতের উপর। ক্ষেত খামারে, শহরে, গ্রামে ও পাহারা দেওয়ার উঁচু ঘরগুলোতে যে সব গুদাম ছিল তার দেখাশোনা করবার ভার ছিল উষিয়ের ছেলে যোনাথনের উপর।
26
চাষীদের দেখাশোনার ভার ছিল কলূবের ছেলে ইষ্রির উপর।
27
আঙ্গুর ক্ষেতের ভার ছিল রামাথীয় শিমিয়ির উপর। আঙ্গুর ক্ষেত থেকে যে আঙ্গুর-রস পাওয়া যেত তার ভাণ্ডারের ভার ছিল শিফমীয় সব্দির উপর।
28
নীচু পাহাড়ী এলাকার জিতবৃক্ষ ও ডুমুর গাছের ভার ছিল গদেরীয় বাল হাননের উপর। জলপাইয়ের তেলের ভাণ্ডারের ভার ছিল যোয়াশের উপর।
29
শারোণে যে সব গরুর পাল চরত তাদের ভার ছিল শারোণীয় সিট্রয়ের উপর। উপত্যকার গরুর পালের ভার ছিল অদ্লয়ের ছেলে শাফটের উপর।
30
ইশ্মায়েলীয় ওবীলের উপর ভার ছিল উটের পালের। মেরোণোথীয় যেহদিয়ের উপর ছিল গর্দ্দভীদের ভার।
31
ছাগল ও ভেড়ার পালের ভার ছিল হাগরীয় যাসীষের উপর। রাজা দায়ূদের সম্পত্তির দেখাশোনার ভার ছিল এই সব তদারককারীদের উপর।
32
দায়ূদের কাকা যোনাথন ছিলেন পরামর্শদাতা, বুদ্ধিমান লোক ও রাজার লেখক। রাজার ছেলেদের শিক্ষার ব্যবস্থার ভার ছিল হক্মোনির ছেলে যিহীয়েলের উপর।
33
অহীথোফল ছিলেন রাজার পরামর্শদাতা, অর্কীয় হূশয় ছিলেন রাজার বন্ধু।
34
অহীথোফলের মৃত্যুর পরে অবীয়াথর ও বনায়ের ছেলে যিহোয়াদা রাজার পরামর্শদাতা হয়েছিলেন। রাজার সৈন্যদলের সেনাপতি ছিলেন যোয়াব।
28
প্রজাদের ও শলোমনের প্রতি দায়ূদের উপদেশ
1
দায়ূদ ইস্রায়েলের সমস্ত কর্মকর্তাদের যিরূশালেমে এসে জড়ো হবার জন্য আদেশ দিলেন। এতে সমস্ত বীর যোদ্ধারা এসেছিলেন। তাঁরা ছিলেন বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতারা, রাজার বারোটি সৈন্যদলের প্রধান সেনাপতিরা, হাজার ও একশো সৈন্যের সেনাপতিরা, রাজা ও রাজার ছেলেদের সমস্ত সম্পত্তি তদারককারীরা, রাজবাড়ীর কর্মকর্তারা ও বীর যোদ্ধারা।
2
পরে রাজা দায়ূদ উঠে দাঁড়িয়ে তাঁদের বললেন, “আমার ভাইয়েরা ও আমার লোকেরা, আমার কথায় মনোযোগ দিন। সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুকের জন্য, অর্থাৎ আমাদের ঈশ্বরের পা রাখবার জায়গার জন্য একটা স্থায়ী ঘর তৈরী করবার ইচ্ছা আমার মনে ছিল, আর আমি তা তৈরী করবার আয়োজনও করেছিলাম।
3
কিন্তু ঈশ্বর আমাকে বললেন, ‘আমার নামে তুমি ঘর তৈরী করবে না, কারণ তুমি একজন যোদ্ধা এবং তুমি রক্তপাত করেছ।’
4
“তবুও ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু চিরকাল ইস্রায়েলের উপর রাজা হওয়ার জন্য আমার গোটা পরিবারের মধ্য থেকে আমাকেই বেছে নিয়েছিলেন। তিনি নেতা হিসাবে যিহূদাকে বেছে নিয়েছিলেন, তারপর যিহূদা-গোষ্ঠী থেকে আমার বাবার বংশকে বেছে নিয়েছিলেন এবং ইস্রায়েলের উপরে রাজা হওয়ার জন্য তিনি খুশী হয়ে আমার ভাইদের মধ্য থেকে আমাকেই বেছে নিয়েছিলেন।
5
সদাপ্রভু আমাকে অনেক ছেলে দিয়েছেন, আর সেই সব ছেলেদের মধ্যে সদাপ্রভুর রাজ্য ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবার জন্য তিনি আমার ছেলে শলোমনকে বেছে নিয়েছেন।
6
তিনি আমাকে বলেছেন, ‘তোমার ছেলে শলোমনই সেই লোক, যে আমার ঘর ও উঠান তৈরী করবে, কারণ আমি তাকেই আমার ছেলে হবার জন্য বেছে নিয়েছি আর আমি তার বাবা হব।
7
যেমন এখন করা হচ্ছে সেইভাবে যদি সে আমার আদেশ ও নির্দেশ পালন করবার ব্যাপারে স্থির থাকে তবে আমি তার রাজ্য চিরকাল স্থায়ী করব।’
8
“কাজেই সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের, অর্থাৎ সদাপ্রভুর সমাজের লোকদের এবং আমাদের ঈশ্বরের সামনে আমি আপনাদের এখন এই আদেশ দিচ্ছি যে, আপনারা আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সমস্ত আদেশ পালন করতে মনোযোগী হন যাতে আপনারা এই চমৎকার দেশে থাকতে পারেন এবং চিরকালের সম্পত্তি হিসাবে আপনাদের বংশধরদের হাতে তা দিয়ে যেতে পারেন।"
9
“আর তুমি, আমার ছেলে শলোমন, তুমি তোমার বাবার ঈশ্বরকে সামনে রেখে চলবে এবং তোমার অন্তর স্থির রেখে ও মনের ইচ্ছা দিয়ে তাঁর সেবা করবে, কারণ সদাপ্রভু প্রত্যেকটি অন্তর খুঁজে দেখেন এবং চিন্তার প্রত্যেকটি উদ্দেশ্য বোঝেন। তাঁর ইচ্ছা জানতে চাইলে তুমি তা জানতে পারবে, কিন্তু যদি তুমি তাঁকে ত্যাগ কর তবে তিনিও তোমাকে চিরকালের জন্য অগ্রাহ্য করবেন।
10
এখন মনোযোগী হও, কারণ উপাসনা করবার জন্য একটা ঘর তৈরী করতে সদাপ্রভু তোমাকেই বেছে নিয়েছেন। তুমি শক্তিশালী হও এবং কাজ কর।”
11
তারপর দায়ূদ তাঁর ছেলে শলোমনকে উপাসনা ঘরের বারান্দা, তাঁর দালানগুলো, ভাণ্ডার ঘরগুলো, উপরের ও ভিতরের কামরাগুলো এবং পাপ ঢাকা দেবার জায়গার নক্শা দিলেন।
12
সদাপ্রভুর ঘরের উঠান, তার চারপাশের কামরা, ঈশ্বরের ঘরের ধনভাণ্ডার এবং উৎসর্গের জিনিস রাখবার ভাণ্ডারের যে পরিকল্পনা পবিত্র আত্মা দায়ূদের কাছে প্রকাশ করেছিলেন তা সবই তিনি শলোমনকে জানালেন।
13
যাজক ও লেবীয়দের বিভিন্ন দলের কাজ, সদাপ্রভুর ঘরের সমস্ত সেবা কাজ এবং সেই কাজে ব্যবহারের সমস্ত জিনিসপত্র সম্বন্ধে তিনি তাঁকে নির্দেশ দিলেন।
14
বিভিন্ন সেবা কাজের জন্য যে সব সোনা ও রূপার জিনিস ব্যবহার করা হবে তিনি তার জন্য কতটা সোনা ও রূপা লাগবে তার নির্দেশ দিলেন।
15
প্রত্যেকটি সোনার বাতিদান ও বাতির জন্য কতটা সোনা এবং ব্যবহার অনুসারে প্রত্যেকটা রূপার বাতিদান ও বাতির জন্য কতটা রূপা লাগবে তার নির্দেশ দিলেন।
16
দর্শন রুটি রাখবার সোনার টেবিলের জন্য কতটা সোনা এবং রূপার টেবিলগুলোর জন্য কতটা রূপা লাগবে তার নির্দেশ দিলেন।
17
মাংস তুলবার কাঁটা, উৎসর্গের রক্ত রাখবার বাটি ও কলসী আর ধূপ বেদীর জন্য কতটা খাঁটি সোনা লাগবে এবং প্রত্যেকটি সোনা ও রূপার পাত্রের জন্য কতটা সোনা ও রূপা লাগবে তার নির্দেশ দিলেন।
18
এছাড়া ধূপ বেদির জন্য, অর্থাৎ সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিন্দুকটি ঢেকে রাখবার জন্য যে সোনার করূবেরা পাখা মেলা অবস্থায় থাকবে তাদের জন্য কতটা খাঁটি সোনা লাগবে তিনি তারও নির্দেশ দিলেন।
19
দায়ূদ বললেন, “সদাপ্রভু যে নমুনা আমার কাছে প্রকাশ করেছিলেন তাঁর পরিচালনায় আমি তা এঁকেছিলাম, আর সেই নমুনার খুঁটিনাটি বুঝবার জ্ঞান তিনি আমাকে দিয়েছিলেন।”
20
দায়ূদ তাঁর ছেলে শলোমনকে এই কথাও বললেন, “তুমি শক্তিশালী হও, মনে সাহস আন এবং কাজ কর। তুমি ভয় কোরো না, নিরাশ হোয়ো না, কারণ সদাপ্রভু ঈশ্বর, আমার ঈশ্বর তোমার সঙ্গে আছেন। সদাপ্রভুর সেবা কাজের জন্য উপাসনা ঘর তৈরীর সব কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি তোমাকে ছেড়ে যাবেন না বা ত্যাগ করবেন না।
21
ঈশ্বরের ঘরের সমস্ত সেবা কাজের জন্য বিভিন্ন দলের যাজক ও লেবীয়েরা প্রস্তুত আছে। সমস্ত কাজে তোমাকে সাহায্য করবার জন্য দক্ষ ও ইচ্ছুক লোকেরাও আছে। নেতারা ও সমস্ত লোকেরা তোমার আদেশ মানতে রাজি।”
29
1
রাজা দায়ূদ তারপর সমস্ত লোকদের বললেন, “আমার ছেলে শলোমনকেই একমাত্র ঈশ্বর বেছে নিয়েছেন; তার বয়সও বেশী নয় এবং অভিজ্ঞতাও কম। এই কাজ খুব মহৎ, কারণ এই বড় দালানটি ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য, কোনো মানুষের জন্য নয়।
2
আমার ক্ষমতা অনুসারে আমি আমার ঈশ্বরের ঘরের জন্য এই সব জোগাড় করে রেখেছি সোনার জিনিসের জন্য সোনা, রূপার জিনিসের জন্য রূপা, পিতলের জিনিসের জন্য পিতল, লোহার জিনিসের জন্য লোহা এবং কাঠের জিনিসের জন্য কাঠ। এছাড়া বৈদুর্যমণি, বসাবার জন্য বিভিন্ন মণি, চক্চকে পাথর, নানা রঙয়ের পাথর ও সমস্ত রকমের দামী পাথর রেখেছি আর অনেক মার্বেল পাথরও রেখেছি।
3
এই পবিত্র উপাসনা ঘরের জন্য আমি যা যা জোগাড় করেছি তা ছাড়াও আমার ঈশ্বরের ঘরের প্রতি আমার ভালবাসার জন্য এখন আমি আমার নিজের সোনা ও রূপা দিচ্ছি।
4
সেই ঘরের দেয়াল ঢাকবার জন্য এবং কারিগরদের সমস্ত কাজের জন্য আমি মোট একশো সতেরো টন ওফীরের সোনা ও দুইশো তিয়াত্তর টন খাঁটি রূপা দিলাম।
5
আজ আপনারা কে কে খুশী হয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিজেকে উৎসর্গ করে দান দিতে চান?”
6
তখন বংশের নেতারা, ইস্রায়েলীয়দের বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতারা, হাজার সৈন্যের ও শত সৈন্যের সেনাপতিরা ও রাজার কাজের তদারককারীরা খুশী হয়ে দান করলেন।
7
ঈশ্বরের ঘরের কাজের জন্য তাঁরা একশো পঁচানব্বই টন সোনা, দশ হাজার সোনার অদর্কোন, তিনশো নব্বই টন রূপা, সাতশো দুই টন পিতল ও তিন হাজার নশো টন লোহা দিলেন।
8
যাঁদের কাছে দামী পাথর ছিল তাঁরা সেগুলো সদাপ্রভুর ঘরের ভাণ্ডারে রাখবার জন্য গের্শোনীয় যিহীয়েলের হাতে দিলেন।
9
তাঁরা খুশী মনে এবং খোলা হাতে সমস্ত অন্তর দিয়ে সদাপ্রভুকে দিতে পেরে আনন্দিত হলেন। রাজা দায়ূদও খুব আনন্দিত হয়েছিলেন।
10
দায়ূদ সমস্ত লোকের সামনে এই বলে সদাপ্রভুর গৌরব করলেন, “হে সদাপ্রভু, আমাদের পূর্বপুরুষ ইস্রায়েলের ঈশ্বর, অনাদিকাল থেকে অনন্তকাল পর্যন্ত তোমার গৌরব হোক।
11
হে সদাপ্রভু, মহিমা, শক্তি, জাঁকজমক, জয় আর গৌরব তোমার, কারণ স্বর্গের ও পৃথিবীর সব কিছু তোমারই। হে সদাপ্রভু, তুমিই সব কিছুর উপরে রাজত্ব করছ; তোমার জায়গা সবার উপরে।
12
ধন ও সম্মান আসে তোমারই কাছ থেকে; তুমিই সব কিছু শাসন করে থাক। তোমার হাতেই রয়েছে শক্তি আর ক্ষমতা; মানুষকে উন্নত করবার ও শক্তি দেবার অধিকার তোমারই।
13
এখন, হে আমাদের ঈশ্বর, আমরা তোমাকে ধন্যবাদ দিই, তোমার গৌরবময় নামের প্রশংসা করি।
14
কিন্তু হে সদাপ্রভু, আমি কে আর আমার লোকেরাই বা কারা যে, আমরা এইভাবে খুশী হয়ে নিজের ইচ্ছায় দিতে পারি? সব কিছুই তো তোমার কাছ থেকে আসে। তোমার হাত থেকে যা পেয়েছি আমরা কেবল তোমাকে তাই দিয়েছি।
15
আমরা তোমার চোখে আমাদের সমস্ত পূর্বপুরুষদের মতই পরদেশী বাসিন্দা। পৃথিবীতে আমাদের দিনগুলো ছায়ার মত, আমাদের কোনো আশা নেই।
16
হে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তোমার পবিত্র নামের উদ্দেশ্যে একটা ঘর তৈরীর জন্য এই যে প্রচুর জিনিসের আয়োজন আমরা করেছি তা তোমার কাছ থেকেই এসেছে এবং এর সব কিছুই তোমার।
17
হে আমার ঈশ্বর, আমি জানি যে, তুমি অন্তরের পরীক্ষা করে থাক এবং সততায় খুশী হও। এই সব জিনিস আমি খুশী হয়ে এবং অন্তরের সততায় দিয়েছি। আর এখন আমি দেখে আনন্দিত হলাম যে, তোমার লোকেরা যারা এখানে আছে তারাও কেমন খুশী হয়ে তোমাকে দিয়েছে।
18
হে সদাপ্রভু, আমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইসহাক ও ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তোমার লোকদের অন্তরে এই রকম ইচ্ছা তুমি চিরকাল রাখ এবং তোমার প্রতি তাদের হৃদয় বিশ্বস্ত রাখ।
19
আমার ছেলে শলোমনকে এমন স্থির অন্তর দান কর যাতে সে তোমার আদেশ, তোমার বাক্য ও তোমার নিয়ম পালন করতে পারে এবং আমি যে দালান তৈরীর আয়োজন করেছি তা তৈরী করতে পারে।”
20
পরে দায়ূদ সমস্ত লোকদের বললেন, “আপনারা আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব করুন।” তখন তারা সবাই তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব করল এবং সদাপ্রভু ও রাজার উদ্দেশ্যে উপুড় হয়ে প্রণাম জানাল।
21
পরের দিন তারা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পশু উৎসর্গ এবং হোমবলির অনুষ্ঠান করল। সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের জন্য তারা এক হাজার ষাঁড়, এক হাজার ভেড়া ও এক হাজার ভেড়ার বাচ্চা উৎসর্গ করল এবং প্রত্যেকটির সঙ্গে নিয়মিত পানীয় উৎসর্গ এবং প্রচুর পশু দিয়ে অন্যান্য উৎসর্গের অনুষ্ঠান করল।
22
সেই দিন তারা সদাপ্রভুর সামনে খুব আনন্দের সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করল। তারা দায়ূদের ছেলে শলোমনকে এই দ্বিতীয় বার রাজা করল এবং তাঁকে রাজা ও সাদোককে যাজককে হিসাবে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে অভিষেক করল।
23
তখন শলোমন তাঁর বাবা দায়ূদের জায়গায় রাজা হিসাবে সদাপ্রভুর সিংহাসনে বসলেন। তিনি সব বিষয়ে সফলতা লাভ করলেন এবং সমস্ত ইস্রায়েল তাঁর কথামত চলত।
24
সমস্ত নেতারা ও সৈন্যেরা এবং রাজা দায়ূদের অন্য সব ছেলেরা রাজা শলোমনের অধীনতা স্বীকার করলেন।
25
সদাপ্রভু সমস্ত ইস্রায়েলের চোখে শলোমনকে খুব মহান করলেন এবং তাঁকে এমন রাজকীয় গৌরব দান করলেন যা এর আগে ইস্রায়েলের কোনো রাজাই পাননি।
দায়ূদের মৃত্যু।
26
যিশয়ের ছেলে দায়ূদ সমস্ত ইস্রায়েলের উপরে রাজত্ব করেছিলেন
27
তিনি চল্লিশ বছর রাজত্ব করেছিলেন সাত বছর হিব্রোণে এবং তেত্রিশ বছর যিরূশালেমে।
28
তিনি অনেক বছর বেঁচে থেকে ধন ও সম্মান লাভ করে খুব বুড়ো বয়সে মারা গেলেন। তাঁর ছেলে শলোমন তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
29
ভাববাদী শমূয়েলের, ভাববাদী নাথনের ও ভাববাদী গাদের ইতিহাস বইয়ে রাজা দায়ূদের রাজত্বের সমস্ত কথা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লেখা রয়েছে।
30
তাঁর রাজত্বের খুঁটিনাটি ও ক্ষমতার কথা এবং তাঁকে নিয়ে, ইস্রায়েলকে নিয়ে আর অন্যান্য দেশের সব রাজ্যগুলোকে নিয়ে যে সব ঘটনা ঘটেছিল সেই সব কথাও সেখানে লেখা রয়েছে।